রবিবার, ১৭ মে, ২০২০

মৃত্যুর নগ্ন ছায়া


""মৃত্যুর নগ্ন ছায়া ""

সাখাওয়াৎ আলম চৌধুরী

মেঘের ভেলায় ভেসে ভেসে যখন নিজের
অস্তিত্বকে অনুধাবন করতে পারলাম,
ঠিক তখনই বুঝেছি একটি নারীর নারীত্বের মূল সুখ কোথায়।
জীবনের রঙিন বসন্তের পালা শেষে
নিজের গহীনে খুঁজে পেলাম এক টুকুরো রক্তপিন্ডের স্বকীয় অস্তিত্ব।
তখনই জগতের সমস্ত সুখের ফোয়ারা যেন
উপছে পড়ছে আমার মাতৃত্বের আঙিনায়।
আমি নিবিড় যতনে ধারণ করলাম
অন্ধকার জঠরে বেড়ে উঠা আমার এক টুকরো ভবিষ্যৎ।
কল্পনায় তাকে নিয়ে ভেসে বেড়ায়
অন্তরীক্ষের নীল নীলিমায় সীমাহীন প্রান্তরে ;
কিন্তু সহসাই কল্পলোকের রাজ্যে হানা দেয় কিছু দুষ্কৃতিকারী -
প্রচন্ড প্রতাপের সাথে জানান দিয়ে যায়,
তারা কেড়ে নেবে আমার সন্তানকে এই সুন্দর বসুন্ধরার বুকে।
তারা মৃত্যুর ফাঁদ আঁকে নির্মল বাতাসে মিশিয়ে মিথেন কার্বনডাইঅক্সাইডের বিষাক্ত গ্যাস।
তারা চক্রান্তের জাল বুনে প্রযুক্তির নব নব
সম্পর্কের রঙিন আলোকচ্ছটার মাঝে ছড়িয়ে নগ্নতার থাবা।
স্পষ্ট ভাবেই দেখি তাদের আনাগোনা
যৌবনের রোমাঞ্চকর বন্ধুত্বের শিরা ধমনিতে
নেশার ধোঁয়ার সর্পিল কুণ্ডুলীতে।
তারা দ্রুতই গ্রাস করছে সন্তানদের
বয়ঃসন্ধিকালীন মরিচিকাসম অস্থির সময়ের অস্তিত্বে।
জ্বালিয়ে দিচ্ছে তাদের ভিতরে ক্রোধ হতাশা
গ্লানির অগ্নির স্ফুলিঙ্গকে জীবন্ত দাবানলের ক্যানভাসে।
আমি আগত ভবিষ্যতের পানে চেয়ে দেখেছি
আমার উদর বেয়ে যে আগমনের অপেক্ষায় আছে -
তার চারদিকে ক্ষুধার্ত মৃত্যুর হিংস্র শকুনেরা
খেলা করছে কদর্য দৃষ্টির থাবা বসিয়ে।
আমি কি পারবো নিজের রক্তে বেড়ে উঠা
বুকের মানিককে একটি সুন্দর অবনী উপহার দিতে?
যেখানে সদা নৃত্যরত বীভৎস কুৎসিত মৃত্যুর নগ্ন ছায়া।

20/10/14


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন