রবিবার, ১৭ মে, ২০২০

খোঁজ নেয় না কেউ



""খোঁজ নেয় না কেউ ""


সাখাওয়াৎ আলম চৌধুরী

"বাইরে যাচ্ছিস, একটু সাবধানে থাকবি " -
এটা বাবার সব সময়ের কথা।
তার ভয় হয়, মেয়ে বলে রাস্তার শেয়াল কুকুরেরা
হয়তো ওৎ পেতে আছে বুনো কামনার উদ্বেল দৃষ্টিতে।
হয়তো আমারই কোন দূর্বলতায় ঠাঁই হতে পারে কোন মনুষ্য জানোয়ারের আস্তানায় ;
তাই বাবার সাবধান বাণী কখনোই অমূলক ছিলো না।

কিন্তু ঘরের ভিতরে মানুষের মুখোশে কত হিংস্র পশু লুকিয়ে ছিলো ,
সেই কথা বাবা কখনোই জানায়নি আমাকে।
যে নর্দমার কীট গুলো ঘুরে বেড়াত পরিবারের সম্পর্কের আস্তরণে ;
বাবা খালি চোখে তাদের দেখেনি কখনোই,
কিন্তু মেয়ে বলে নরম শরীরের অযাচিত ছোঁয়ায়
তাদের উপস্থিতি অনুভব করতাম প্রতিটি ক্ষণে ক্ষণে।
সেই পশুদের দেখেছি চাচার কদর্য্য অস্বস্তিকর চুমুতে,
কথার বাহানায় স্পর্শ অঙ্গে বিব্রতকর ভাবে গর্হিত চাওয়ায়।
তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছি সম্পর্কের ভাইয়াদের মাঝে,
যখন তাদের অস্থির নিষ্পেষিত হাত খুঁজে বেড়াত ছোট বোনের কচি শরীর।
সেই মাঝবয়সী দাদুরা, যারা ছোট্ট নাতনির তুলতুলে গালে
আর নরম নিতম্বে খুঁজে নিতো নিজেদের নিকৃষ্ট উষ্ণতা।

ভালবাসা আর কদর্যতার পার্থক্য বুঝিনি তখন,
তবে অস্বস্তিকর অস্থিরতায় হাসফাঁস ছিলো সেই জীবন।
সময়ের সাথে সাথে বাড়ে ঘৃন্য আদরের ব্যপ্তি,
যা ছিলো প্রকাশ্যে বয়সের কারণে
এখন তা খুঁজে নেয়. নিরিবিলি অন্ধকার ছাউনি।
সুন্দর কথায় উপহারের লোভে না চাইলেও যেতে হতো বাধ্য মেয়ের মতো।
কাকে বলবো আমি? কাকে বলতে পারি
কিভাবে ভাসছি আমি আপনজনের তপ্ত আদরের নিষিক্ত জলে।
বাবা বলে তুই সাবধানে থাকবি ;
বাবা, আমি সাবধানেই থাকি এখন,
সেই বয়সটা আমার হয়েছে।
কিন্তু যে সময়টাতে তোমাদের সাবধান থাকার কথা ছিলো
সেই সময়টাতে তোমরা সাবধান হওনি।
তোমরা কখনোই খোঁজ নাওনি যখন ছোট্ট শরীরে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ছিলো না ;
যখন আঁধারে নগ্নতার চোরাবালিতে হারিয়ে যেতাম উষ্ণতার জলে।

28/10/14


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন