"""স্বপ্নগুলো পিষ্ট হয় যান্ত্রিক থাবায় """
প্রতিদিনের মতো শুভ্র আলোতে উজলা হয় যান্ত্রিক শহর,
জীবন জীবিকার তাগিদে নিরন্তর ছুটে চলেছি আমারা গন্তরহীন।
নিত্য চলার পথে হলেও আজ হঠাৎ নিবন্ধ আঁখি -
পিচঢালা পথের বুকের জমিনে রক্তাক্ত ক্যানভাসে।
নিরব নিশ্চল একটি দেহ পড়ে আছে করুণার দৃষ্টিতে,
এখনো ঘুরছে চাকা উল্টে যাওয়া তার ভ্যানগাড়িটির।
বিদ্যুৎ গতিতে ছুটে আসা যান্ত্রিক দানবের পিচাশ থাবায়,
সকালের হাস্যোজ্জ্বল ব্যক্তিটি এখন মৃত লাশ।
যে খুব ভোরে উঠে হয়তো খুনসুটি করেছে তার গর্ভবতী স্ত্রীর সাথে - " এইবার কিন্তু মাইয়া হইবো। "
হয়তো তার বড় ছেলে আবদার করেছে,
এই ঈদে কিনবে সে জিন্স প্যান্টের সাথে লাল শার্ট।
আজ খুব সকালে সে বেরিয়েছিল, অভিমানী বৃদ্ধ পিতামাতার কথা চিন্তা করে - যারা তার দিকে চেয়ে থাকে নিরন্তর অক্লেশে।
আজ সকালে তার চোখে শুধু স্বপ্ন ভেসেছিল
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বপ্নের ফোয়ারা তার প্রিয়জনদের ঘিরে,
কিন্তু সেই স্বপ্ন দেখা লোকটি এখন একটি লাশ।
বিষাদনীল গগনে মৃত্যুর পূর্বে তার চোখে কী ভেসেছিল?
কামুক পুষ্পের পাপড়ির ন্যায় পোয়াতি স্ত্রীর করুনার মুখ,
নাকি অভ্রভেদী কুয়াশার সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকা স্বপ্নাতুর ছেলের হাস্যোজ্জ্বল মুখচ্ছবি?
নাকি তমস্র কান্তার মায়াবী দিগন্তে থাকা
তার অনাগত মেয়ে সন্তানের নির্মল চাহনি?
নাকি পংক্তির অভিমানের প্রাচীরে দাঁড়িয়ে থাকা,
বৃদ্ধ পিতামাতার অশ্রুস্নাত নির্লিপ্ত নয়ন?
আমরা জানি না, আমরা কেউ জানিনা মহাকালের ঐন্দ্রজালিক গায়ে লেগে থাকা হাজারো স্বপ্নের কথা।
যা পিচাশ বিক্ষুব্ধ রাস্তায় পরে প্রতিনিয়ত ধ্বংস হয়ে যায় যান্ত্রিক দৈত্যের করাল থাবায়।
12/6/17
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন