বৃহস্পতিবার, ২৮ মে, ২০২০

তব প্রেমে জমলো ভালবাসা


তোমার হাসি
চৈতালী রোদ্রে তপ্ত ধরায় প্রেম জাগালো।
তোমার চাহনি
উত্তাল নদীতে নিরাশা বেলায় তরী ভাসালো।

তোমার দুষ্টামিতে
আমার মরা গাঙগে আষাঢ় জলে ভরে উঠলো।
তোমার ছন্দের কথনে
নিঝুম অরণ্যে ঝিরঝির সমীরণে সুর ছড়ালো।

তোমার চঞ্চলতা
আমায় নতুন এক ধরণীর ঠিকানা দিলো।
তোমার অভিমান
তোমায় তীব্র ভাবে ভালবাসতে শেখালো।

তোমার খুনসুটিতে
আমার মিষ্টি মধুর সময় যাবে ভালো।
তোমায়  ছাড়া
আমার শূন্য সবই  জীবন এলোমেলো।
3/5/14


অপেক্ষার নোনাজল


আজ বসে ছিলাম একা একা
পাবো বলে তার একটু দেখা।
আজ মনে লাগিয়েছিলাম পাখা
পেতে তার আলিঙ্গনে একটু সখা।

আজ সে ভুলে গেলো দিন
আজ যে ছিলো মোর জন্মদিন।
আমার গহীনে বাজে করুন বীন
কেমনে কাটায় তার বিহনে এই দিন।

মনের খুশিতে লাগিয়েছি  আলতা
আজ তাহার সনে শুধু ব্যকুলতা।
কেন আজ মনে জমছে জীর্ণতা?
তাকে কি পেয়েছে কোন সংকীর্ণতা?

তবে কেন সে এলো না একটি বার?
সে ছাড়া মোর হৃদয় জ্বলে যে অঙ্গার।
সে কি জানে না আজ মোর জন্ম বার?
তবে কেন ফোন করলো না একবার?

তার জন্য ব্যকুল আজ প্রাণ
বসে আছি শুনব তার মুখে গান।
আজ কষ্ট ঝরে বুকে অবিরাম,
নোনা জলে ভরছে মরু উদ্যান।

29/4/14


নিকৃষ্ট প্রেমিক


বুকের গহীনে হৃদস্পন্দন ভেদ করে
কয়েক ফোটা নোনা জল গড়িয়ে এলো।
মূহু মূহু অস্থিরতায় বুকের ভিতরে
একধরনের কষ্টের নীল বাষ্প জমা হয়ে আছে।
আমি নিজেকে এক অপদার্থ মানুষ ছাড়া
আর কিছুই ভাবতে পারছি না।
এমন ও কি  মানুষ আছে এই পৃথিবীতে?
যে কিনা নিজের প্রিয়তমাকে ভুলে যায়?
যাকে ভালবাসে সে নিজের চাইতেও বেশী,
সমগ্র কিছুর বিনিময়ে যে পেতে চায় প্রেমিকা।
সেই কিনা ভুলে গেছে আজ প্রেমিকার জন্মদিন?

এর চাইতে আর নিকৃষ্ট কি হতে পারে?
হ্যাঁ আমি এক নিকৃষ্ট অপদার্থ প্রেমিক,
নিজেকে প্রেমিক ভাবতেই আজ ঘৃণা হয়।
আমি প্রেমিক নামে কলঙ্ক।

কেউ আজ বসে ছিলো অপেক্ষায়,
শুনবে তার প্রিয়তমের মুখে শুভজন্মদিন।
কিন্তু রমনীটি  এতটাই দূর্ভাগা যে
তার হৃদয় জুড়ানো কোন বাক্য
তার আগ্রহী কানকে স্পর্শ করলো না।

মেয়েটি আজ সকল কাজ ভুলে
হয়তো একটি প্রহরই গুনেছে।
কখন আসবে একটি ফোনের  কল,
কখন হৃদয় উজার করে বলবে কথা।
কখন হবে সাঙ্গ এই বিরহ বেলা,
কখন আসবে সেই মধুর ক্ষণটি।
কিন্তু সে আশায় গুঁড়েবালি,
কোন কলই আসেনি আজ
জানিয়ে জন্মদিনের অভিবাদন।

নিজেকে আজ কিভাবে বুঝাবো যে
আমি কতটুকু অপরাধে অপরাধী।
আমার অপরাধ এতটাই গর্হিত যে,
এর বিনিময় কিছুই হতে পারে না।
আমি ভালবাসার আদালতে পাপী,
আমি এক নষ্ট নিকৃষ্ট প্রেমিক।

28/4/14


আমি রাবার গাছ হতে চাই


রাবার গাছের রস দেখেছ?
ধবধবে সাদা মিহি আঠালো কষ।
ওটা রস নয়, ওটা তার কষ্ট।
নিষ্ঠুর আঘাতের ক্ষতবিক্ষত হওয়ার কষ্ট।
তার প্রাণ আছে কিন্তু সে প্রাণবন্ত নয়,
সে প্রাণবন্ত নয় কারণ তার ভাষা নেই।
তার ভাষা নেই কারণ সে বলতে পারে না।
তাই শত অত্যাচারেও সে কখনো
কিছুই বলতে পারে না।
তার নির্মম আঘাত গুলোর বদলে
সে হাসিমুখে দেয় শুভ্র রক্ত বিসর্জন।
ওটাই তার ভাষা, শত আঘাতেও বিরক্ত নয়।
কিন্তু আমি মানুষ, আমার ভাষা আছে।
আমার কষ্টও আছে, আছে কষ্টের বিস্তৃতি।
মানুষের কষ্ট গুলো রাবার গাছের
কষ্টের মতো নয়নের নোনা জলে বেড়িয়ে আসে।
কিন্তু আমি পুরুষ বলে আঁখি জলে
নিজেকে ভাসাতে পারি না।
আমার নীল কষ্ট গুলো কুটকুট করে
আমার গহিনটাকে কেটে কুটিকুটি করে দিচ্ছে।
আমি নির্বাত হৃদয়ে নির্বাক হয়ে
চেয়ে থাকি অসীমের পানে।
আমার প্রতিটি শিরা উপশিরায়
কষ্টেরা নিঠুর ভাবে করে আনাগোনা।
আমি বসে থাকি অলস ভাবে,
কেটে যায় সকাল সন্ধ্যা রাত অবারিত ভাবে।
নির্জীবের মতো চেষ্টা করি
কখনো রাবার গাছ হওয়া যায় কিনা।
তাহলে তার মতো আমার কষ্ট গুলোও
হাসিমুখে এই শরীর মন থেকে বিদায় দিতাম।

30/4/14


তোমার কথাটি শুনবো বলে


তোমার একটি কথা শুনবো বলে
রয়েছি আমি শত অপেক্ষায়
তোমার একটি কথা শুনতে আমি
থাকতে পারি হাজারো প্রতীক্ষায়।

তোমার একটি কথা শুনাবে বলে
আমি রাত্রিতে জোৎস্না সাজায়।
তোমার একটি কথা শুনবে বলে
রাতের তারা আকাশে লুকায়।

তোমার একটি কথা শুনার জন্য
সাঁঝের আলোয় জোনাক জ্বলে।
তোমার একটি কথা শুনবে বলে
প্রজাপতি উড়ে দলে দলে।

তোমার একটি কথা শুনাবে বলে
কৃষ্ণচূড়ার  রঙিন সাজ।
তোমার একটি কথা শুনবে বলে
কোকিল ডাকে সুরে আজ।

তোমার একটি কথা শুনার জন্য
আমার বুকে করুন আর্তনাদ।
তোমার একটি কথা শুনবো বলে
আমি এখনো হইনি  উদ্মাদ।

তোমার একটি কথা শুনবে বলে
শৈল তাকায় আকাশ পানে।
তোমার একটি কথা শুনার জন্য
মেঘ ঝরে বৃষ্টি বানে।

তোমার একটি কথা শুনবে বলে
নদীর পাড়ে কাশফুল হাসে।
তোমার একটি কথা শুনার জন্য
নীল আকাশে শঙ্খ ভাসে।

তোমার একটি কথাই আজ বল তুমি
ভালোবাসি আমি শুধু তোমাকে।
তোমার এই কথাটি শুনবো বলেই
জীবিত দেখছো তুমি আমাকে।

27/4/14


আমি এক খড়কুটো


আমি নিজেকে খড়কুটো ছাড়া আর কিছুই ভাবিনা ;
যখন যেদিক থেকে বাতাস এসে
উড়িয়ে নিয়ে যায়,
আমি সেই দিকেই ধাবিত হই ;
আমার নিজ্বস্ব ক্ষমতা বলতে কিছুই নেই।
আমি এক নির্লিপ্ত নিষ্প্রাণ বিহঙ্গ ন্যায়,
যার ডানা নেই তবুও উড়ি,
তবে নিজের ইচ্ছাধীন নয় কখনোই ।
আমি উড়ে যায় ভেসে বেড়ায় সবই ঐ প্রকৃতির হাতে,
সে যেভাবে উড়িয়ে নিয়ে যায়
আমিও সেই ভাবে উড়ে যায় আজ্ঞাবহের মতো।
এই খড়কুটোর জীবন নায়ে
তুমি কেন এসেছ জীবন সাথী হতে?
এই অনিশ্চিত জীবনে কেন পা বাড়াচ্ছ?
যেখানে সোনালী রবি সদা হাতছানি দিয়ে
ডাকছে তোমায় -
তুমি ফিরে যাও তোমার বর্ণীল রঙের
উচ্ছল তারুন্যে ভরা জীবনে।
কেন আসো তুমি মোর পিছু পিছু?
আমি নিজেকে নিয়েই  চলতে পারি না
সেখানে তোমাকে বইবার দুঃসাহস আমার নেই।
আমি এক খড়কুটো মাত্র,
তোমাকে বইতে গেলে আমার নিজের
অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে।
এইতো বেশ ভালো আছি
সমীরণ করে আমায় নিয়ে নাচানাচি।

30/4/14


শুভ্র আকাশে মেঘের কান্না


এই, তুমি এতো বিষন্ন কেন?
আজ আমি সাজিয়েছি আকাশ
রাতের তারার সাথে জোৎস্না দিয়ে ;
তোমায় দিতে এক রুপালী রাত্রি উপহার।

এ কি! তোমার এখনো মন খারাপ?
আমি আজ অরন্যকে বলেছি,
তুলতে এক নতুন সুর, ঝিরঝির বাতাসে ;
তোমাকে দিতে নিঝুম অরন্য সমাহার ।

ওমা!  এখনো দেখি মুখ ভার,  একটু তো হাসো।
আজ আমি থরেথরে কৃষ্ণচূড়ায়
রাঙিয়েছি ভূবন, তোমায় দেবো বলে,
একটি স্বপ্ন বর্ণীল ভালবাসার দিন।

কি হলো, তোমার চোখে পানি?
আমি তো আজ আকাশে মেঘ সাজায়নি ;
তবে কেন প্রিয়ার চোখেতে আষাঢ়ের কান্না?
বলো প্রিয়তমা, কি কষ্টের কথা রয়েছে জমা।

তুমি সাজিয়েছ জোৎস্নায় আকাশ
ঐ আকাশ দেখার মোর নেই অবকাশ।
তুমি তুলেছে নতুন সুর গহীন অরন্যে
সেই সুর আর থাকবে না মোর স্বরণে।

তুমি রাঙিয়েছ ভূবন রঙিন কৃষ্ণচূড়ায়
রঙিন ভূবনে দুজনে থাকা হবেনা ধরায়।
তুমি সাজায়ওনি আকাশ কখনো মেঘেতে
আজ সেই আকাশে শুরু করেছে মেঘ জমতে।

সেই কষ্টের মেঘেতে মেঘ ঘর্ষণে আজ কান্না,
আজ থেকে তোমার আকাশে নেই মোর ঠিকানা।

27/4/14


তিমির গহ্বরের ধরিত্রী


তিমির গহ্বরের আজিকে ধরণী
হারিয়েছে শুদ্ধতা বিশুদ্ধ অবনী।
চারদিকে আজিকে উৎসুক ফণী
নিবিষ্ট কর্মে করিতে পাপিনী।

নিপীড়িত মানবতা নিগ্রহে নিমজ্জন
নিষ্ক্রিয় বিধাতা নিগৃহীত নিঃসরণ।
নিন্দিত শয়তান করে নিমন্ত্রণ
ধরীত্রীতে আজ তারই নিয়ন্ত্রণ।

অসুরের কর্মে শুভ্রতা নির্বিকার
জগৎ জুড়িয়ে রাবণের আঁধার।
পাপিষ্ঠ জগৎ করিবেকে নিবার
কাটিবেকে এই, ভ্রষ্ট আন্ধার?

এখনো অনেক বাকি রাত্রি
রয়েছে হাজার পথহারা যাত্রী।
করিবে কে তাদের বন্ধনে ভাতীৃ
আহবান করি, এমন এক যাত্রী।

রাত্রির শেষে রবির ঊষা
নাবিক নেতৃত্বের করি আশা।
গড়িবে বসুধা দিয়ে ভালবাসা
সে -ই আমাদের শেষ ভরসা।

6/4/14


তোমার সাড়ার অপেক্ষায়


এলোমেলো সমীরণ হাতছানিতে
নিভৃতে  কাছে ডাকছিল আমায়,
চেয়েছিলো সে দুদন্ড দাড়িয়ে কিছু
ভালবাসার বাণী যেন শোনায়।

উত্তাল নদীতে দাড় টেনে মাঝি
গাইছিল মনের মাধুরীতে গান,
চেয়েছিলো সে শুনিয়ে প্রেম কথা
জুড়াবে মোর অস্থির প্রাণ।

এক টুকরো মেঘ ভেসে ভেসে
আসছিল আমার ছায়ার সাথে,
চেয়েছিলো মেঘ বলতে  ব্যকুলতা
হিয়ার সাথে চোখের ইশারাতে।

অরণ্য গহীনে বিহঙ্গেরা তুলেছিল
মন ভোলানো এক অচিন সুর,
সুরের মূর্ছনায় হৃদয় গহীনে চাইলো
জাগাতে প্রেম মোর সুমধুর।

আমি সমীরণের মন ভুলানো
হাতছানিতে ধরা দেয়নি,
মাঝির উদাস গলায় ভাবের গানে
আমার মন ভোলেনি।

আমি দুষ্টু মেঘের মিষ্টি  ইশারায়
পথ ভুলে  হারিয়ে যায়নি,
বিহঙ্গের অচিন মন মাতানো
অরণ্য সুরে কান পাতিনি।

করেছি আমি অধীর অপেক্ষা
হাতছানিতে তুমি ডাকবে,
আমি রয়েছি শত প্রতীক্ষায়
মনের মাধুরীতে তুমি গাইবে।

চেয়েছি আমি আখিঁর ইশারায়
ব্যকুল হয়ে আমায় ডাকবে,
রয়েছি এখনো সেই অপেক্ষায়
তোমার প্রেমে কাছে টানবে।

29/5/14


ক্ষণিকের চন্দ্রাবতী


ব্যস্ততার শহরে আমরা সবাই ব্যস্ত
কারও দুদন্ড দাড়াবার সময় নেই।
আমিও তাদের একজন,
যেকিনা সকাল সন্ধ্যা অফিসের জোয়াল
টেনে টেনে বাধ্য বলদ হয়ে গেছি।
জীবনে এখনো কেউ আসেনি
যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখব কিংবা স্বপ্ন গড়ব।
এমনই চলছিল বাঁধাধরা জীবন।

কোন একদিন অফিসের জরুরি কাজে
খুব দেরি হয়ে গেলো।
সচারচর আমি দেরিতে বাসায় ফিরি না,
বা পারতপক্ষে রাতে বাইরেও থাকি না।
কিন্তু ঐ দিন....একটু দেরীই হলো।
গাড়ি পাচ্ছিলাম না বলে
হাটতে হাটতে অনেক দূর চলে আসলাম।
যেখানে রাতের অন্ধকারে
আলো আধার খেলা করছে ;
আমি তীর্থের কাকের মতো
এদিক ওদিক করছি গাড়ি পাবো বলে।

গাড়ি পাচ্ছিলাম না ঠিকই
কিন্তু এমন একটা সুগন্ধ পাচ্ছি,
যা হঠাৎই আমাকে মোহময় করে তুললো।
আমি বুঝতে পারলাম না কোথা থেকে
এই মিষ্টি সুরভিত সুগন্ধ আসছে।
হঠাৎই আবছা আলোয় দেখতে পেলাম
কিশোরী উত্তীর্ণ চন্দ্রাবতী নারীর রূপ।
মুহূর্তেই চোখ সরিয়ে নিলাম,
তবুও বুকের ভিতর কেমন জানি
খচখচ করতে ছিলো আরেক বার দেখার জন্য।
আমি বুঝতে পারলাম এ নারী রাতের পাখি,
কিন্তু এতো রূপ যৌবন নিয়ে কেন?

সহসা মূর্তিটি এসে দাড়ালো গা ঘেষে।
আমি সরে যেতে চাইলাম,
কিন্তু কোন এক মায়াবী বীণে আবিষ্ট আমি।
তার সুচারু তীক্ষ্ণ চাহনীতে পরাস্থ আমি,
পারলাম না চোখ ফেরাতে।
কত ভালবাসায় বিধাতার এমন সৃষ্টি,
কত সুনিপুণ কারুশৈলী তার রূপে।
ইশারায় চোখের চাহনীতে বললো নারী,
চলো আমার সাথে, কর আজ অমৃত আস্বাদন।

আমার তখন কান্ডজ্ঞানহীন অবস্থা,
আমি ভুলে গেছি তখন,  আমি কে?
ভুলে গেছি আমার সমাজে অবস্থান,
ভুলে যাচ্ছি সবই, শুধু মায়াবী অধর চারপাশে।
যখনই আমাকে নিয়ে গেলো কামিনীর একান্ত কক্ষে,
তখনই আমার মোহ গেলো ভেঙে।
যখন নারী উজার করে দাড়ালো সম্মুখে,
আমার ক্ষণিকের প্রেম হারালো দেখে আশেপাশে।

কতই তুচ্ছ তাদের জীবন,
কতই অসহায় তারা।
কতটাই নগন্য তারা সমাজে
নেই তাদের শোয়ার একটু ভালো ঠাঁই।
ক্ষণিকের ভ্রান্তি আমাকে শাঁসালো,
লজ্জিত হলাম আপন মনে।
চন্দ্রাবতী তার চেষ্টার ত্রুটি করছে না
গ্রাহকের মনোরঞ্জনের।
কিন্তু আমার তাতে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই,
পকেট থেকে কিছু টাকা দিলাম ক্ষণিকের চন্দ্রাকে।
অবাক নয়নে তাকিয়ে থাকা ছাড়া
চন্দ্রাবতীর আর কিছু করার ছিলো না।

16/4/14


ফেব্রুয়ারি আকাশ


ফেব্রুয়ারির বাতাসে তখন
ছিলো বসন্তের আনাগোনা।
ফেব্রুয়ারির বাতাসে ছিলো
রঙিন স্বপ্নের জাল বোনা।

ফেব্রুয়ারিতে আকাশ ছিলো
স্লোগানে স্লোগানে মুখর।
ফেব্রুয়ারিতে ছিলো তখন
শত আশংকার ভীত প্রহর।

ফেব্রুয়ারিতে ফুটেছে তখন
বসন্ত রঙিন কৃষ্ণচূড়া।
ফেব্রুয়ারিতে অপেক্ষা মাতার
তার পুত্রের বাড়ি ফেরা।

ফেব্রুয়ারিতে কন্যার চাওয়া
তার জন্য লাল জামা।
ফেব্রুয়ারিতে মিলেছে স্ত্রীর
স্বামীর শার্টে রক্ত জমা।

ফেব্রুয়ারিতে হাজার ছাত্রের
বিক্ষোভ ভরা অগ্নি মিছিল।
ফেব্রুয়ারিতে জাগ্রত জনতা
হয়েছে মিছিলে তখন শামিল।

ফেব্রুয়ারিতে চেয়েছে শত্রু
কেড়ে নিতে মায়ের ভাষা।
ফেব্রুয়ারিতে করেছি বিনাশ
হয়নি পূরন তাদের আশা।

ফেব্রুয়ারি যোগায় সাহস
করে উন্নত মোদের শির।
ফেব্রুয়ারি জাগায় বিশ্বাস
আমরা জাতিতে মহান বীর।

18/2/14


ফেব্রুয়ারি তুমি



ফেব্রুয়ারি তুমি
ছেলে হারানো মায়ের কান্না।
ফেব্রুয়ারি তুমি
ভাইয়ের জন্য বোনের অপেক্ষা।
ফেব্রুয়ারি তুমি
নববধূর গায়ে সাদা  শাড়ি।
ফেব্রুয়ারি তুমি
মায়ের ভাষার আদায়ের লড়াই।
ফেব্রুয়ারি তুমি
ছাত্র জনতার মুখর মিছিল।
ফেব্রুয়ারি তুমি
শোষণের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ।
ফেব্রুয়ারি তুমি
শহীদদের বুকের তাজা রক্ত।
ফেব্রুয়ারি তুমি
বসন্তে রাঙা রঙিন ফুল।

21/2/14


আজ প্রেম ছাড়া কিছু নেই

" আজ প্রেম ছাড়া কিছু নেই """



আজ আর কোন কবিতা নয়
আজ চোখেতে চোখ হোক মন বিনিময়।
আজ আর কোন নয় কোন গান
আজ প্রাণেতে প্রাণ মিশে হোক অম্লান।

আজ আর বলার নেই কোন ভাষা
সব ভাষা হারিয়ে আজ হোক ভালবাসা।
আজ আর নয় কোন ফাঁকি
আজ প্রেমের বন্ধনে হোক আঁকাআঁকি।

আজ আর নয় কোন বিরহ ব্যথা
আজ বলবো দুজনে মনের যতো কথা।
আজ আর নয় কোন স্বপ্ন বোনা
আজ সব ভুলে হোক শুধু প্রেমের আল্পনা।

25/4/14


তন্দ্রায় চন্দ্রাবতী

"""  তন্দ্রায় চন্দ্রাবতী """"





কে হাসে?
রিনঝিন ছন্দ দুলিয়ে এই নিঝুম নিশিতে।
কার হাসি ভাসে?
নিরব তরঙ্গিনীর ছলছল ঢেউয়ের শব্দ গতিতে।
কি দেখছি আমি?
তন্দ্রায় ঢুলঢুল নির্লিপ্ত অস্পষ্ট আঁখির চাহনিতে।
কে তুমি চন্দ্রাবতী?
আমাকে কি গভীর রাত্রিতে পেয়েছে পাগলামীতে?
তবে কেন শুনছি
রূপবতীর আলতা পায়ে নূপুরের ঝুমঝুম শব্দ?
কেন আমি দেখছি?
হাস্যপ্রোজ্জ্বল অধর যা করছে আমায় প্রলুব্ধ।
একি মোর তন্দ্রা প্রলাপ?
তবে কেন চন্দ্রাবতীর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে হৃদয় স্তব্ধ?
একি!  এতো ঘুম কেন?
চোখ কেন অসাড়তায় নুইয়ে পড়ছে ঘুমে?
আমি কি দেখব না?
এতো আলো আঁধার খেলায় কি হৃদয় জমে?
একি! তুমি চলে যাচ্ছ?
চন্দ্রাবতী, একটু তো ছোঁয়া দাও ভাসতে তব প্রেমে।

3/5/14


তব জয়ে হলো মোর ক্ষয়

""তব জয়ে হলো মোর ক্ষয় """




দুরন্ত শৈশবে উড়েছি প্রজাপতির মতো,
বাড়ন্ত কৈশোরে হেসেছি ঝর্নার মতো।
দীপক যৌবনে বেড়িয়েছি পাখির মতো,
পড়ন্ত যৌবনে গুটিয়েছি শামুকের মতো।

দীপ্তিময় কৈশোরে সাজিয়েছিলাম মন
দীপিত যৌবনে পেয়েছিলাম তব বন্ধন।
উচ্ছ্বাসে রঙিন ছিলো মোর জীবন,
উড়ন্ত মেঘের মতো বেড়িয়েছি তখন।

দিগন্ত নীলিমা দিতো মোরে হাতছানি
প্রশস্ত অন্তরীক্ষ নিতো মোরে টানি।
অফুরন্ত অবসর কাটতো ধারে তরঙ্গিনী,
জোনাকির আলো আধারে সমাপ্ত রজনী।

নিভৃতে এসে তুমি করলে মোরে জয়
নিশ্চিন্তে ভেবে দিলাম তোমায় মোর হৃদয়।
নিমজ্জন তব প্রেমে ছিলো আশংকার ভয়,
নির্ভীক আবিষ্ট কন্ঠে তুমি দিলে নির্ভয়।

অবশেষে তটিনীতে ছুটলো প্রেম তরী
অমায়িক ভালবাসায় গড়লাম মোরা বাড়ি।
ভালোই চলছিলো মোদের প্রেমের গাড়ি,
হঠাৎই তোমার মুখে শুনি আমি আনাড়ি।

আমার আকাশ জুড়ে মেঘের ঘনঘটা,
বর্ষার বৃষ্টি ধারায় ছোটে অস্রু ফোটা।
গতানুশোচনায় ভাবি নিজেরে পাপিষ্ঠা
তোমার অন্তর আদায়ে থাকে প্রচেষ্টা।

এখন দিবস কাটে স্মৃতি বুকে নিয়ে,
রতিক্রিয়ায় রজনী কাটে মরা খাটে শুয়ে।
আজ জিজ্ঞাসু চোখে থাকি আমি চেয়ে,
কেন এই জীবন নিপাতন হলো ক্ষয়ে।

তুমি কখনো ভালবাসনি অন্তরে আমায়
তোমার ভালবাসা ছিলো কামনার ছায়ায়।
তুমি কখনো বুঝোনি অন্তর কি চায়,
তুমি মেতেছিলে আমাকে জয়ের ইচ্ছায়।

17/4/14


কবিতা লেখার অধিকার হারিয়েছি

কবিতা লেখার অধিকার হারিয়েছি 




আমি আর কোন কবিতা লিখব না,
কবিতা লিখার কোন অধিকার নেই আমার।
যে ছবি চেয়ে আমি কবিতা লিখতাম,
আজ সেই ছবি ভুলে গেছি অস্পষ্ট ভাবে।
যে মানুষটি আমার কবিতার হাতেখড়ি,
সেই মানুষকে আজ আমি ভুলে গেছি।
যে মায়াবী অধর কল্পনা করে করেছি সৃষ্টি
হাজারো গদ্যে ছন্দে হৃদয়স্পর্শী কবিতা,
আজ সেই অধরেই লেপন করেছি কৃষ্ণকায়া।
যে মানবীর জন্য নিয়েছি কলম হতে,
আজ সেই মানবীর প্রিয় দিন গেছি ভুলে।
যার রিনঝিন কণ্ঠে দুলিত হতো মোর হিয়া,
আজ সেই কণ্ঠে শুনতে পারিনি একটি বার
ওগো প্রিয় তুমি কেমন আছো?
আমি এতোটাই অকর্মণ্য যে
নিখাদ নিগূঢ় ভালবাসা আজ পিষেছি পায়ে।
কিভাবে আমি লিখব নতুন একটি প্রেমের কবিতা,
যে আমি নিজেই হতে পারিনি প্রেমিক।
আমার কি সেই অধিকার আছে,
কোনো প্রেমিকা কষ্ট দিয়ে মিষ্টি প্রেমের কবিতা লেখা?
আমার দ্বারা আর কি কবিতা লিখা সম্ভব?

29/4/14


তোমার একটি কথা

তোমার একটি কথা 




তোমার একটি কথাই চাইলে পারে
জীবন টাকে বদলে দিতে।
তোমার একটি কথাই চাইলে পারে
জীবনটাকে রঙে রাঙাতে ।

তোমার একটি কথাই চাইলে পারে
রাতের বুকে স্বপ্ন আঁকতে।
তোমার একটি কথা চাইলে পারে
সুন্দর জীবন ঘুরে দাড়াতে।

তোমার একটি কথাই চাইলে পারে
মরুর বুকে ফসল ফলাতে।
তোমার একটি কথাই চাইলে পারে
উত্তাল নদীতে তরী ভাসাতে।

তোমার একটি কথাই চাইলে পারে
অমানুষকে মানুষ করতে।
তোমার একটি কথা চাইলে পারে
খরার পরে বৃষ্টি ঝড়াতে।

তোমার একটি কথাই চাইলে পারে
মৃত আত্মাকে জীবন দিতে।
তোমার একটি কথাই চাইলে পারে
গোমড়া মুখে হাসি ফোঁটাতে।

তোমার একটি কথাই চাইলে পারে
চাঁদের বুকে ঘর বানাতে।
তোমার একটি কথাই চাইলে পারে
গহীন অরন্যে ঘর সাজাতে।

তোমার একটি কথার জন্য সবাই
রয়েছে কত অপেক্ষাতে।
তোমার একটি কথা জানার জন্য
সবাই থাকেযে প্রতীক্ষাতে।

27/4/14


তোমার কথাটি বলার পর

"তোমার কথাটি বলার পর ""





তোমার একটি কথা বলার পর
বাড়বে বুকে অনুশোচনা।
তোমার একটি কথা বলার পর
হারাব আমি সব চেতনা। 

তোমার একটি কথা বলার পর
পাবো আমি কত কষ্ট।
তোমার একটি কথা বলার পর
হতেও পারি আমি নষ্ট।

তোমার একটি কথা বলার পর
হারাবো আমি সকল বিশ্বাস।
তোমার একটি কথা বলার পর
হারাতে পারি আমার নিশ্বাস।

তোমার একটি কথা বলার পর
হয়ে যাবো আমি উদ্মাদ।
তোমার একটি কথা বলার পর
বেড়িয়ে আসবে করুন আর্তনাদ।

তোমার একটি কথা বলার পর
মোর পৃথিবী হয়ে যাবে শূন্য।
তোমার একটি কথা বলার পর
নিজেকে লাগবে নিজেই ঘৃণ্য।

তোমার একটি কথা বলার পর
আমার আকাশ জোৎস্না হারা।
তোমার একটি কথা বলার পর
আমার পাহাড় নীলিমা হারা।

তোমার একটি কথা বলার পর
হৃদয়ে বইবে মরুর ঝড়।
তোমার একটি কথা বলার পর
জীবনে কখনো হবেনা ঘর।

তোমার একটি কথা বলার পর
আমার হবে স্বপ্ন চূর্ণ।
তোমার একটি কথা বলার পর
জীবন হবে মোর অসম্পূর্ণ।

তোমার একটি কথা বলা মানেই
আমিহীন এক পৃথিবীর কল্পনা।
তোমার একটি কথা না বললেই
তোমায় নিয়ে গড়িব আল্পনা।

27/4/14


ভালো মানে এই নয়

ভালো মানে এই নয় 



ভালবাসা মানে এই নয়
সারাদিন মুঠোফোনে প্যানপেনানি,
ভালবাসা মানে এই নয়
শুধু তোমাকে ঘিরেই দিবস রজনী।

ভালবাসা মানে এই নয়
শুধু আবেগকে ঘিরেই পথ চলা "
ভালবাসা মানে এই নয়
পুরো দুনিয়াকে করা হেলাফেলা।

ভালবাসা মানে এই নয়
তোমার জন্য নিত্য নতুন জামা,
ভালবাসা মানে এই নয়
সবকিছুতেই তোমায় করা ক্ষমা।

ভালবাসা মানে এই নয়
শত অত্যাচার নিরবে সহ্য করা,
ভালবাসা মানে এই নয়
বাস্তবতাকে ঘৃণ্য ভাবে তুচ্ছ করা ।

ভালবাসা মানে এই নয়
তোমার জন্য বানাবো অট্টালিকা।
ভালবাসা মানে এই নয়
ভাসবে তুমি  প্রবাহ গড্ডলিকা।


কেন এখনো ভয়

"'কেন এখনো ভয় "''"'




এখনো কেন এতো ভয়?
মরুভূমির বুকে ফসল ফালায়ে
আমারে করিয়াছ তুমি জয়।

এখনো কেন এতো কষ্ট?
তিমির আঁধারে পথ ধরিয়াছ
তুমি হতে দাওনি পথ ভ্রষ্ট।

এখনো কেন এতো হতাশা?
সিংহল সমুদ্র পাড়ি দিয়েছি
কভু টুটেনি আমাদের আশা।

এখনো কেন তোমার কান্না?
হাজার দৈন্যতায়ও ছিলে অটল
বয়ে গেছে কত ঝড় বন্যা।

এখনো কি হয়না বিশ্বাস?
এ জীবনের শেষে মরণের পরও
আমি তোমারই, দিচ্ছি এ আশ্বাস।

24/4/14


তুমি নেই বলে

"তুমি নেই বলে """"




তুমি নেই বলে
আমার আকাশে জ্বলে না সুখ তারা।
তুমি নেই বলে
আমার পৃথিবী আজ হয়েছে স্বপ্ন হারা।

তুমি নেই বলে
আমার আজ হয় না কবিতা লেখা।
তুমি নেই বলে
আমার পথ হয়েছে আঁকাবাঁকা।

তুমি নেই বলে
আমার দৃষ্টিতে আর বৃষ্টি ধরা দেয় না।
তুমি নেই বলে
আমার সৃষ্টি আর কৃষ্টি হয়ে উঠে না।

তুমি নেই বলে
আজ ভরা পূর্নিমায় হয়না জোৎস্না ভেজা।
তুমি নেই বলে
আমার আত্মা দেয় প্রতিনিয়ত সাজা।

তুমি নেই বলে
দক্ষিণ জানালায় বয়না দক্ষিণা হাওয়া।
তুমি নেই বলে
বৈশাখ বরণে হয়না এখন যাওয়া।

তুমি নেই বলে
বসন্ত কোকিল দিয়েছে মোরে ফাঁকি।
তুমি নেই বলে
মরুর বুকে তোমার অবয়ব আঁকি।

তুমি নেই বলে
আমার কানন হয়েছে পুষ্প হারা।
তুমি নেই বলে
আমার আঙিনায় ফড়িং দেয়না ধরা।

তুমি নেই বলে
নিঝুম রাত্রিতে উঠে কষ্টের তুফান।
তুমি নেই বলে
আমার গাঙগেতে রয়না প্রেমের সোপান।

23/4/14


ভুলো তুমি অতীতের ব্যথা

"ভুলো তুমি অতীতের ব্যথা "



মন, তুমি ভুলে যাও,
ভুলে যাও সেই সব কথা
যা তোমায় মনে দিয়েছে অসহ্য ব্যথা। 

মন,  তুমি রেখো না মনে, 
রেখো না  সেই সব স্মৃতি
যাতে রয়েছে নিদারুণ কষ্টের বিস্তৃতি।

মন,  তুমি ভুলে যাও,
ভুলে যাও সেই সব ক্ষণ
যা তোমার গহীনে  করেছে রক্তক্ষরণ।

মন,  তুমি ছুঁড়ে ফেলো, 
ছুঁড়ে ফেলো সেই সব দিন
যখন গিয়েছে সময় তোমার দুর্দিন।

মন,  তুমি ভেবো না তাদের ,
ভেবোনা সেই সব মানুষ
যারা ভেবেছে তোমায় তুচ্ছ ফানুস।

মন, রেখোনা গেঁথে আশা,
ভুলে যাও সেই সব আশা
যার কখনো তুমি পাওনি কোন ভরসা।

মনে,  তুমি ভুলে যাও,
ভুলে যাও সেই সব স্বপ্ন
যা বাস্তবে হবেনা কখনো পূর্ণ।

মন তুমি মুছে ফেলো,
মুছে ফেলো সব হতাশা
হতাশাকে মাড়িয়ে কর রঙিন আশা।

মন,  তুমি পিষিয়ে দাও
পিষিয়ে দাও সেই সব জরাজীর্ণতা
যা জীবনকে দিতে পারে না কোন পূর্নতা।

মন তুমি  চেয়ে দেখ,
চেয়ে দেখ ঐ নতুন সূর্য
যা গড়বে তোমায় নতুন এক তূর্য।

20/4/14


তুমি চেয়েছ বলে

""""তুমি চেয়েছ বলে ""




তুমি চেয়েছ বলে
আমি স্বপ্ন বুনি রাতের নিঝুম বুকে,
তুমি চেয়েছ বলে
আমি তরী ভাসায় প্রমত্তা নদীর বাঁকে।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি সিংহল সমুদ্র দূর্মরে দেয় পাড়ি।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি অরন্য বুকে নিভৃতে বানায় বাড়ি।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি ঘোর বর্ষার মাঝে করি উদ্দাম নৃত্য।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি হয়েছি তোমার একান্ত অনুগত ভৃত্য।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি মরুভূমির বুকে রোপী ফসলের বৃক্ষ।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি উড়িয়া বেড়ায় সমগ্র অন্তরীক্ষ।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি কামনা বাসনা সঁপেছি তব পদতলে।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি ক্রোধ উদ্মাদনা পিষিয়াছি মোর পদতলে।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি ভূধর মাড়িয়া করেছি তৃণ সমতল।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি হুংকার ছাড়ি ডরায়েছে মনব সকল।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি চুমুকে চুমুকে চুষিয়াছি তব ওষ্ঠ।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি ধরণীতে হতে চায় মানবের তরে শ্রেষ্ঠ।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি ঐশ্বর্য ছাড়িয়া আসিয়াছি গাছ তলায়।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি কৃষ্ণাঙ্গরে বাঁধিয়াছি প্রেমের মায়ায়।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি তোমার মাঝে ভালবাসা খুজেঁ বেড়ায়,
তুমি চেয়েছ বলে
আমি ভালবাসিয়া যাব জীবনেরও শেষ বেলায়।

22/4/14


কবিতার বিরস ক্ষণ


""""" কবিতার বিরস ক্ষণ """




কবিতায় নেই কোন ছন্দ
কবিতায় নেই আর আনন্দ।
হৃদয়ের চোখ আজ  অন্ধ
কবিতা হয়ে আসে বন্ধ।

কবিতায় আজ নেই  মায়া
কবিতায় নেই প্রেমের ছায়া।
কবিতা হারিয়েছে তার খেয়া
কবিতা হয়ে উঠে কৃষ্ণকায়া।

কবিতায় খুঁজি নিজেকে আমি
কবিতা হয়েছে মোর অন্তর্যামী।
কবিতায় পায় মোর জীবনী
কবিতাতেই পার হয় মোর যামিনী।

16/4/14


শেষ বিকেলে এসে


""""""শেষ বিকেলে এসে """




মেঘের ভেলায় চড়ে
ধরণী দিয়েছে হাজারো ঘূর্ণন।
সময়ের পথ ধরে
প্রকৃতি হয়েছে আজ পরিপূর্ণ।

হাটি হাটি  করে
আজ জীবন হয়েছে পূর্ণ।
তবু কেন ভিতরে
মনে হয় রয়েছে কিছু অপূর্ণ।

হতাশায় রাখে  ঘিরে
আজ জীবন হতো যদি ভিন্ন।
তবে অনুশোচনার ভারে
আজ জীবন হতো না ছিন্ন।

রাখতাম যদি ধরে
তোমাকে করতাম সব পরিকীর্ণ।
তবে নিজের নীড়ে
সুখ ছেড়ে হতাম না জরাজীর্ণ।

বিদগ্ধ মর্মে মরে
না দিতাম তোমায় যদি ফিরিয়ে।
তবে অভিশপ্ত ঘরে
আজ আমি যেতাম না হারিয়ে।

পতিত সমাজ সংসারে
যদি দাঁড়াতাম তোমার কাছে গিয়ে।
তবে সমাজ কারাগারে
কেউ পারত না দিতে উড়িয়ে।

অমাবস্যার কৃষ্ণ আঁধারে
খুঁজি আমি আলোর রঙিন দিশা।
বিধ্বস্ত বুক ঘিরে
চায় বেড়িয়ে আসতে করুন  হতাশা।

উদিত রশ্মি দিবাকরে
স্বপ্ন দেখে করি বাঁচার আশা।
স্বপ্ন দেখি আন্ধারে
কেউ যদি দেয় মোরে ভালবাসা।

5/4/14


লিখতে চাই

""""লিখতে চাই """




একটি কবিতা খাতায় লিখতে
কলম নিয়েছি হাতে,
মনের রঙের রঙ তুলিতে
আল্পনা দিবো তাতে।

ভাবছি আমি ভাবনা কতই
অগোছালো সব ভাষা,
লিখছি আমি লিখতে চাই
আমার মনের আশা।

হয়না কিছুই হওয়ার মতো
যেমনটা আমি চায়,
হচ্ছে সবই হাওয়ার মতো
যেন উড়ে সব ছাই।

বুকের মাঝে কথার বাষ্প
ফুলে ফেঁপে শুধু উঠে,
কলমের আগায় শুধু ভস্ম
কিছুই আসে না ফেটে।

15/4/14


অসাড় মস্তিষ্ক


"""""অসাড় মস্তিষ্ক  """"""





মস্তিষ্কের ঠিক কেন্দ্রে, রয়েছে কিছু শব্দ জমা ;
বুকের ঠিক গহীনে, রয়েছে কিছু অনুভূতি।
মস্তিষ্কে জমে থাকা শব্দ গুলি,
চায় আবেগের সাথে বেড়িয়ে আসতে।
কিন্তু কোন এক গুমোট কারণে,
সেই শব্দের কথামালা
ফুটে উঠে না কলমের আঁচড়ে।

আমি এখন চরম অস্বস্তিতে
প্রবল প্রতিকুলে করছি হাঁসফাঁস।
বুকের ভিতরে জমে থাকা কথার জালে
আমি জড়িয়ে পড়ছি আষ্টেপৃষ্ঠে।
কিন্তু কিছুতেই কেন জানি
কোন ভাষা খুজেঁ পাচ্ছি না লেখনিতে।

মাঝে মাঝে কেন এমন হয়?
কেন কিছুই পারি না লেখাতে সাজাতে,
কেন কিছুই আসে না কলমে।
চারদিক ঝিমঝিম একপ্রকার ঘূর্ণন,
মস্তিষ্কের আশেপাশে করে অস্ফুট শব্দ।
এরই মাঝে অসাড় হয়ে থাকি ঝিমিয়ে,
কোন কিছুই আসে না মোর লেখনীতে।

12/4/14

 


তুমি আসার জন্য


""""তুমি আসার জন্য """"




তুমি আসবে বলে _ শশী,
জোৎস্না বিলিয়ে যায়।
তুমি আসবে বলে _রবি,
তার প্রখরতা হারায়।

তুমি আসবে বলে _তরঙ্গিনী,
নিরবে বয়ে যায়।
তুমি আসবে বলে _সিন্ধু,
মিশে যায় নীলিমায়।

তুমি আসবে বলে _শৈল,
ঐ গগনে তাকায়।
তুমি আসবে বলে _অরণ্যে,
সমীরণ বয়ে যায়।

তুমি আসবে বলে _বিহঙ্গ,
মনের মাধুরীতে গায়।
তুমি আসবে বলে _পবন,
দক্ষিণ হতে বয়।

তুমি আসবে বলে _মেঘরা,
দূরে সরে যায়।
তুমি আসবে বলে _যামিনী,
রয়েছে অপেক্ষায়।

তুমি আসবে বলে _কামিনী,
সৌরভ ছড়িয়ে বেড়ায়।
তুমি আসবে বলে _প্রজাপতি,
রঙিন পাখা লাগায়।

তুমি আসবে বলে _ হৃদয়,
স্বপ্ন দেখতে চায়।
তুমি আসবে বলে  _ আমি,
প্রেমে হারিয়ে যায়।

10/4/14


তোমায় দিলাম """"


"""""তোমায় দিলাম """"




আমার স্বপ্ন মোড়ানো
সাধের বিকেল তোমায় দিলাম।
তোমার বিষন্নতার
পড়ন্ত বিকেল আমায় দিও।

আমার আগুন লাগা
ফ্লাগুন সন্ধ্যা তোমায় দিলাম।
তোমার বেদনাবিধুর
বসন্ত প্রহর আমায় দিও।

আমার রোমাঞ্চ ভরা
বৃষ্টির ক্ষন তোমায় দিলাম।
তোমার অস্বস্তি লাগা
তপ্ত দুপুর আমায় দিও।

আমার উত্তাল যৌবনের
স্বর্ণালী সময় তোমার জন্য।
তোমার বার্ধক্যের
নিষ্প্রভ দীপ্তিতে আমায় ডেকো।

আমার বালি ঝলসানো
চন্দ্রিমা ক্ষণ তোমার জন্য।
তোমার নিঃসঙ্গ সাঁঝের
দিনান্তকালে আমায় ডেকো।

আমার উদ্দীপনা ভরা
প্রাণের বৈশাখ তোমার জন্য।
তোমার কুয়াশা ঝরা
শীতের ক্ষনে আমায় ডেকো।

আমার মিষ্টি অনুরাগের
সময়গুলো তোমার তরে।
তোমার তিক্ত বেদনার
অভিমান গুলোয় দিও মোরে।

আমার অখণ্ড ভরা
শরতের অবসর তোমার তরে।
তোমার বিরহী বর্ষার
কষ্টে গুলোয় দিও মোরে।

আমার প্রাণের উচ্ছলতার
আনন্দ গুলো তোমার তরে।
তোমার একাকীত্বে ভরা
তিক্ত ছোঁয়ায় দিও মোরে ।

8/4/14


কতটুকু হলে .....


"""""""""কতটুকু হলে .....'"""






কতটুকু ভালবাসলে তুমি সুখী হতে ;
একবার কি তুমি বলবে?
কতটুকু আবেগেী হলে তুমি সুখ পেতে ;
একবার কি তুমি বলবে?

কতটুকু সময় দিলে তুমি হতে পরিপূর্ণ;
আমায় কি একবার জানাবে?
কতটুকু মায়া করলে হতো সেটা সম্পূর্ণ ;
আমায় কি একবার জানাবে?

কতটুকু সময় কাটালে মানুষ হয় আপন;
প্রমাণ কি দেখাতে পারবে?
কতটুকু সহনশীলতায় হয় দিন যাপন ;
আমায় কি দেখাতে পারবে?

কতটুকু নিঃস্বার্থ হলে তুমি থাকতে ঘরে;
আমায় কি বলে . দিবে?
কতটুকু ডাকলে তুমি আসতে ফিরে ;
আমায় কি বলে  দিবে?

9/4/14


সাজায় তোমার তরে


""""""সাজায় তোমার তরে """




তুমি আসবে বলে
পড়ন্ত বিকেল দিয়েছি বিদায়।
তুমি আসবে বলে
সাজিয়েছি সন্ধ্যা জোৎস্নার আলোয়।

তুমি আসবে বলে
উদ্গ্রীব হয়ে  আমি অপেক্ষায়।
তুমি আসবে বলে
রাতের আকাশে তারা সাজায়।

তুমি আসবে বলে
পাখিদের সাথে গান গায়।
তুমি আসবে বলে
প্রজাপতির পাখায় রঙ লাগায়।

তুমি আসবে বলে
হৃদয় গহীনে সুখ ছড়ায়।
তুমি আসবে বলে
স্বর্ণালী রোদ এই ধরায়।

তুমি আসবে বলে
বৃষ্টির ছোঁয়ায় নিজেরে রাঙায়।
তুমি আসবে বলে
তাকিয়ে আছি দক্ষিণ জানালায়।

তুমি আসবে বলে
সময় চলে মালা গাঁথায়।
তুমি আসবে বলে
বিরহে এখনো সময় কাটায়।

তুমি আসবে বলে
পুলকিত আমি রঙিন ছোঁয়ায়।
তুমি আসবে বলে
আবেগেী মন তোমায় ভাবায়।

9/4/14


রাত্রির অনুভব



"""""""রাত্রির অনুভব """





পড়ন্ত বিকেলে আলো আধার ক্ষনে,
তোমারই মায়াবী অধর পড়ে যে মনে।
ঝিরিঝিরি সমীরণ এলোমেলো স্মৃতি, 
দুষ্টু  মধুর ছবি  করে ইতিউতি।

নিঝুম সন্ধ্যা ঘনিয়ে শর্বরী আসে,
তোমারই চারু কন্ঠ আশেপাশে হাসে।
জোৎস্নার আলোতে চমকিত শশী,
তোমারই অনুভবে কাটে মোর নিশি।

ক্ষনে ক্ষনে ডাকে রাত জাগা পাখি,
তোমারই ভাবনায় নির্ঘুম আখিঁ।
নিরব প্রকৃতিতে বহে তরঙ্গিনী,
তোমাকে কাছে চায় ওহে সঙ্গীনি।

রাত্রি গভীর হয় বাড়ে নিরবতা,
বিগত ছোঁয়ায় বাড়ায় আকুলতা।
যামিনী শেষে রবি উঠে হেসে
তোমাকেই ভাবি আছ তুমি পাশে।

7/4/14


এখনো কি .......


""'"''এখনো কি ...""""



এখনো কি ঝরা জোৎস্নায়
যাও কি তুমি, সেই দীঘির ধারে?
যেখানে দুজনের দিনগুলো
গিয়েছিল একসাথে দুজনাতে।

এখনো কি ভরা বর্ষায়
দাঁড়াও কি তুমি, সেই জানলার ধারে?
যেখানে বৃষ্টির স্পর্শে
হারাতাম মোরা প্রকৃতির সাথে।

এখনো কি শীতের বেলায়
যাও কি তুমি, সেই নদীর পাড়ে?
যেখানে আঁচল বিছিয়ে
হারিয়ে যেতাম দুজন দুজনাতে।

এখনো কি বসন্ত ছায়ায়
যাও কি তুমি, সেই পাহাড় কিনারে?
যেখানে অরন্য আলোয়ে
মিশতাম দুজন দূর দিগন্তে।

এখনো কি কবিতার মায়ায়
হারাও কি তুমি, সেই স্মৃতির আঁধারে।
যেখানে কবিতার অঙ্গনে
কবিতার সাজে তুমি সাজতে।

এখনো কি মোর অপেক্ষায়
থাকো কি তুমি, দাড়িয়ে দরজার ধারে?
যেখানে সহস্র প্রহর
নির্ঘুম চোখে থাকতে অপেক্ষাতে।

এখনো কি গভীর তন্দ্রায়
যাও কি তুমি, স্বপ্নের রঙিন ঘরে?
যেখানে হাজারো কল্পনায়
বর্ণীল সুখের সংসার আঁকতে।

5/4/14


কখনো যদি ....


"""""কখনো যদি ....."""




কখনো যদি মনে হয়
কোন জোৎস্না ঝরা দিনে
একাকী মন চায় আমাকে,
তবে সকল দ্বিধাবোধ ভুলিও।
তুমি ডাকিও আমাকে ;
আমি তোমার তরে সদা
প্রস্তুত থাকিব তোমার আহবানের।

কখনো যদি ইচ্ছে হয়
ঝরা বাদলের বর্ষা দিনে,
নিজেকে ভুলে গিয়ে
করতে চাও বৃষ্টি স্নান।
তবে স্বরণ করিয়ো আমাকে ;
আমি অপেক্ষায় থাকিব
তোমার প্রেমময় নিবিড় আহবানের।

কখনো যদি মনে চায়
শীতের কুয়াশা হিমেল দিনে,
সকল জরাজীর্ণতা ভুলে
পেতে একটু উষ্ণ আলিঙ্গন।
তবে মনে রেখো আমাকে ;
আমি অধীর আগ্রহে
রইব তোমার উষ্ণ আহবানের।

কখনো যদি ভাব অসহায়
কোন গোধূলির পড়ন্ত দিনে,
সকল কিছু হারিয়ে
হও পরাজিত তুমি একাকীত্বে।
তবে ঠাঁই দিও আমাকে ;
তোমার একাকীত্ব ঘোচাতে
আছি সদায় তোমার আহবানের।

কখনো যদি  কষ্টের ভয়
পীড়িত করে যাপিত দিনে,
কষ্টের বেদনায় নীল
হয়ে ভাব তুমি বিধ্বস্ত।
তবে ভুলিও না আমাকে ;
তোমার কষ্টের নীলে
উপশম হতে অপেক্ষা আহবানের।

5/4/14


ভালো লাগা তোমার আমার


ভালো লাগা তোমার আমার 


ভালো লাগে তোমার
দুষ্টু ভরা আখিঁ ,
মন খারাপ আমার
দাও যখন ফাঁকি।

ভালো লাগে তোমার
তুলতুলে অধর,
কষ্ট লাগে আমার
অপেক্ষার প্রহর।

ভালো লাগে তোমার
বেনী করা চুল,
লজ্জা লাগে আমার
করি যখন ভুল।

ভালো লাগে তোমার
চিকন চাকন দেহ,
ভয় লাগে আমার
নেয় কেড়ে কেহ।

ভালো লাগে তোমার
কোমরের বিছে,
খারাপ লাগে আমার
পায়না যখন কাছে।

ভালো লাগে তোমার
হাতে রঙিন চুড়ি,
ভালো লাগে না আমার
তোমায় ছাড়া ঘুরি।

ভালো লাগে তোমার
আল্লাহর ভক্তি,
খারাপ লাগে আমার
বিষন্নতার উক্তি।

ভালো লাগে তোমার
বিশুদ্ধ  বিশ্বাস,
ভয় লাগে আমার
বন্ধ হবে শ্বাস।

ভালো লাগে তোমায়
যখন তুমি শান্ত,
মন্দ লাগে আমার
যখন হই ক্লান্ত।

ভালো লাগে তোমার
ঝিলিক দেয়া হাসি,
ভালো লাগে আমার
যখন দেখি খুশি।

ভালো লাগে তোমার
নিবিড়  ভালবাসা,
অপেক্ষা আমার
কখন বাঁধবো বাসা।

8/4/14


অশ্রুর জলে অংকুরিত ভালবাসা ""


অশ্রুর জলে অংকুরিত ভালবাসা 




রাতের নির্জনতা, নির্ঘুম মিট মিট করে জ্বলা জোনাকি -
ছিলো সেই নিকষ কালের সাক্ষী,
যখন আমার তাচ্ছিল্যের ভালবাসায়, তোমার
হৃদয় গাঙ্গে উঠেছিলো নিষ্ঠুরতার ঝড়।
দীর্ঘ শুন্যতার পরে গড়িয়েছিলো দু ফোঁটা অশ্রু,
ঐ কাজলে আঁকা শুভ্র কাশফুলের ন্যায় চোখের কোণে।
শুক্লপক্ষের চাঁদ সাক্ষী সেই শেয়াল ডাকা রাত্রির প্রহরে,
যখন তোমার নির্বাক অশ্রু ফোঁটা -
মরুভূমিসম এই হৃদয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছিলো জলোচ্ছাসের মতো।
যার শিশির ভেজা দূর্বাঘাসের ছোঁয়ায়,
মৃত শ্মশান অন্তরে জেগে উঠেছিলো প্রেমের ঊষার আলো।
খরার তপ্ত মৃত্তিকায় তখন উদ্ভাসিত হয় ভালবাসা
নব অংকুরিত সবুজ পত্রপল্লবের সমারোহে।
আমি আজন্ম ঋণী সেই ক 'ফোঁটা অশ্রুর কাছে,
যা এই বিধ্বস্ত নির্পতিত হৃদয়কে দিয়েছে
চিত্তপ্রসাদ, তোমার নির্ঝরা প্রেমের বিনিময়ে।

24/7/14


নিঃশেষিত তোমার মাঝে


নিঃশেষিত তোমার মাঝে



আমাকে তুমি নিঃশেষ করেছ!
মৃত নদীর রুক্ষ মরুভূমির প্রান্তরের ন্যায় ;
তপ্ত গ্রীষ্মের চৌচির  মৃত্তিকা বৃষ্টির পরশে যেমন,
শুষে নেয় বৃষ্টির প্রগাঢ় ভালোবাসা এক নিমিষে ;
ঠিক তেমনি করে তুমি আমাকে তোমাতে বিলীন করেছ।
আমার সাঁওতালী মেঘের যুবতী সন্ধ্যাকে
তুমি শুষে নিয়েছো, শেষ রক্ত বিন্দুর মাঝে থাকা প্রাণের অস্তিত্বের মতো।
বাঁধাহীন নিলীমার উড়ন্ত  বলাকার মতো ডানাহীন এই আমি,
তোমার প্রেমের প্রজাপতির পাখনায় ভর করে,
ছুটে চলেছি দিগন্তহীন ভালোবাসার ফেনিল চন্দ্রিমা উদ্যানে।
সাপুড়ের মোহগ্রস্থ ঐন্দ্রজালিক বীনের সুরে,
এলিয়ে পড়েছি তোমার ভালোবাসার বৃক্ষে শীর্ণলতার মতো।
তোমার অন্তহীন ভালোবাসার মাকড় জালে জড়িয়ে,
তলিয়ে যাচ্ছি চোরাবালির অতল গহ্বরে। 
নির্ঘুম পেঁচার অন্ধকার গ্রাস করা উপবাসী ফিনকি ঝরা জ্যােৎস্নার আলোর মতো,  আমার আমিত্ব কে মিলিয়ে দিয়েছো শৃঙ্খল প্রেমের শেকলে।
আমি আজ নিঃশেষিত তোমার মায়াময় ইপ্সিত ভালোবাসার বাহুডোরে।

4.6.17


সোমবার, ১৮ মে, ২০২০

ইদানিং কবিতা লেখা হয়ে উঠে না


"""ইদানিং কবিতা লেখা হয়ে উঠে না ""


ইদানিং কবিতা গুলো পড়ে থাকে
মাকড়সার জালের মতো চারদিকে  ছড়িয়ে ।
কবিতার পংক্তি গুলো চেয়ে থাকে
রগরগে চোখে শাসানোর ভঙ্গিতে।
কেন আমি তাদের কাঁচা হতে
কান্ডজ্ঞানহীন ভাবে সাজাতে গেলাম।
কবিতার লাইন গুলো ঝিমিয়ে আছে
এবড়ো থেবড়ো ভাবে নির্বিকার চাহনিতে।
আর ছন্দ! সেতো বলার অপেক্ষাই রাখে না
পারলে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি।
আসলে ইদানিং কবিতা, কোন কবিতাইই হচ্ছে না।
তুমি চলে যাবার পর
আমাকে আর কবিতারা ভালবাসেনা।
আমি হাজার চেষ্টা করি ,
শত প্রচেষ্টাই আমার ব্যর্থ হয়।
একটি একটি শব্দ নিয়ে গুছিয়ে সাজিয়ে,
কতোই কসরত করি লিখতে একটি কবিতা।
শুধু একটি কবিতা শুধু তোমায় নিয়ে।
কিন্তু তা হয়ে উঠছে না,
যে জলজ্যান্ত তোমাকেই রাখতে পারলাম না
সেখানে কবিতায় কিভাবে তোমাকে ঢাকবো?
তাই ইদানিং কবিতা লেখা হয়ে উঠে না।



3/5/14


ভ্রান্তির জীবন

ভ্রান্তির জীবন 




জীবনসায়াহ্নের শেষ রাত্রি ঘিরে
বিগত স্মৃতিরা চায় ফিরে ফিরে।
যৌবনের উত্তাল তটিনীর ধারে
যা ছিলো তখন,  গিয়েছে মরে।

কিশোরীর আবেগে আকাশে উড়েছি
চঞ্চল মনে বিশ্বাসে সঁপেছি।
প্রেমের উম্মাদনায় অজানায় ভেসেছি
ভ্রান্তির ছলনায় সবই  হারিয়েছি।

সোনালি রঙ মাখা স্বপ্নের ঘোরে
দুজনে পাড়ি দেই রঙিন  শহরে।
অজানা কারণে বদ্ধ আমি ঘরে
শকুনের  ব্যবচ্ছেদ আমাকে ঘিরে।

কথা ছিলো দুজনে গড়বো বাড়ি
তার সাথে এসেছি সবকিছু ছাড়ি।
বিশ্বাসে যারে নিয়ে  জীবন গড়ি
সেই মোর সুখ, নিয়েছে কাড়ি।

আজ আমি উচ্ছিষ্ট সমাজ কাননে
জ্বলে অঙ্গারিত  অগ্নির দহনে।
অতিষ্ঠ আমি নগ্ন জীবনে
অতুচ্ছ আমি নিগৃহীত ভূবনে।

8/4/14

আমায় তুমি জয় করেছ

""আমায় তুমি জয় করেছ """"""





আমার খুব স্বপ্ন ছিলো
নীল আকাশে উড়ার,
আমার খুব ইচ্ছে ছিলো
ঐ নীলিমায় হারাবার।

পাখা ভেঙে চার দেয়ালে,
স্বপ্ন গুলো রয়যে পড়ে,
পথিকের খামখেয়ালে
ইচ্ছে গুলো যায় যে মরে।

স্বপ্ন তুমি দেখিয়েছিলে
দিগন্তে নীলিমা ছোঁয়ার,
ভিতরে তুমি জাগিয়েছিলে
অসীমের অলীককে ধরার।

ছিলো আমার ভালবাসা
জোৎস্না রাতের তারার সাথে,
ছিলো আমার আনন্দ
বর্ষা দিনে ভিজে যেতে।

আমায় তুমি স্বপ্ন দেখালে
তোমার রাজ্যে হারিয়ে যেতে,
তাইতো আমি বিশ্বাসে
সঁপেছি মোরে তোমার হাতে।

এখন আমার দিন কাটে
সাদা আকাশের শূন্যে চেয়ে,
এখন আমার রাত কাটে
মরা শয্যার সঙ্গী হয়ে।

এখন আমি বর্ষা দেখি না
বর্ষা ঝরে আমার চোখে,
এখন আমি বসন্ত দেখি না
বসন্ত রঙ, নেই যে মুখে।

আমায় তুমি ভালবাসনি
চাওনি কখনো বুঝতে,
আমায় তুমি  জয় করেছ
তাইতো বেঁধেছো বৃত্তে।

16/4/14

বিশ্বস্ততায় আপন

বিশ্বস্ততায় আপন




জীবনে চেয়েছি এমন একটি হাত,
যে হাত ধরে আমি যেতে পারব
সেই সুদূরে, বিস্তীর্ণ আমার সীমানায়।
আমি পেয়েছি সেই বিশ্বস্ত হাত,
তোমার বন্ধুত্বের হাতের মাঝে।

জীবনে চেয়েছি এমন একটি দৃষ্টি,
যে দৃষ্টিতে আমি নিজেকে দেখব ;
সেই গভীরত্বে, যা বাস্তবতায় মানায়।
আমি পেয়েছি সেই দীপ্তির দৃষ্টিভঙ্গি,
তোমার তীক্ষ্ণ আখিঁর মাঝে।

আমি চেয়েছি সুন্দর একটি হৃদয়,
যে হৃদয়ে জুড়ে আমি থাকব ;
সেই বন্ধনে, অবাধ প্রেমের ছায়ায়।
আমি পেয়েছি সেই উচ্ছ্বসিত হৃদয়,
তোমার তৃষিত  প্রেমের মাঝে।

আমি খুজেঁছি প্রশস্ত একটি বুক,
যে বুকে নিরাপদে আমি থাকব ;
সেই মমত্বে, অমলিন ভালবাসায়।
আমি পেয়েছি সেই স্ফীত  বুক,
তোমার বিশ্বস্ত বাহুর মাঝে ।

আমি চেয়েছি মমতার একটি কাঁধ,
যে কাঁধে মাথা রেখে আমি স্বপ্ন দেখব ;
সেই ভূবনে, যেখানে ভাসবো ভেলায়।
আমি পেয়েছি স্বপ্ন দেখার কাঁধ,
তোমার আমোদী  কাঁধের মাঝে।

আমি খুজেঁছি ভালবাসার একটি কন্ঠ,
যে স্বরে শুধুই আমি শুনব ;
মিষ্টি প্রেমের স্বর্গে , হারাব অজানায়।
আমি পেয়েছি প্রেমী কন্ঠস্বর,
তোমার সুমিষ্ট বাগ্মীর মাঝে।

10/4/14

আমার একটি পাহাড় আছে

আমার একটি পাহাড় আছে 




আমার একটি পাহাড় আছে
সাজিয়েছি আমি গহিন অরন্যে,
আমার পাহাড়ের দুঃখ গুলো
ভাঁজ হয়ে থাকে গহীনে।

আমার  পাহাড়ের কষ্ট গুলো
ঝর্ণা হয়ে যায় বয়ে,
আমার পাহাড়ের বিরহ গুলো
বৃষ্টিতে যায় যে ক্ষয়ে।

আমার পাহাড়ে বিহঙ্গ কলরব
শুনি আমি কান পেতে,
আমার পাহাড়ে জোনাক জ্বলে
চাঁদনী ক্ষণে জোৎস্না রাতে।

আমার পাহাড়ে আমি একা
তাকিয়ে থাকি ঐ নীলিমায়,
আমার পাহাড়ে শূন্য আমি
পড়ন্ত বেলায় দিগন্ত মায়ায়।

20/4/14

এখনো আমি


""""এখনো আমি """"



এখনো আমি প্রতিদিন যাই সেখানে,
সেই নদীর কিনারে,
যেখানে তুমি আমি যেতাম এক সময় ।
খুঁজি তোমাকে সেই মাটির দূর্বাঘাসে,
যেথায় বসতে তুমি।
সাজিয়ে শাড়ির আঁচল,
পার হতো কিছু রোমাঞ্চ ক্ষণ
হারাতাম মোরা স্বপ্নের স্বর্গলোকে।
আজ তুমি নেই পাশে,
তবুও তোমার স্পর্শ রয়েছে এই মাটির হৃদয়ে।

এখনো যায় আমি, সেই পাহাড় চূড়ায়,
যেখানে যেতে চাইতে তুমি প্রায়ই।
যেখানে হারাতে তুমি ঐ নীলিমায়,
দুহাত প্রসারিত করে তুমি চাইতে
হারিয়ে যেতে দূর দিগন্তে।
আজ তুমি সত্যিই হারিয়ে গেছো,
হারিয়ে গেছো ঐ দিগন্ত নীলিমায়।
তবুও আমি আসি এখানে
তোমার পরশ পেতে,
যে পরশ পেয়েছে এই পাহাড় চূড়া।

এখনো কাছে টানে সেই অরন্য,
যেথায় তুমি হারিয়ে যেতে নিঝুম গহীনে।
শুনতে তুমি বিহঙ্গের কলরব,
কাছে টানতো তোমায় প্রকৃতির নিরবতা।
আমি এখনো শুনি সেই প্রকৃতির গান,
শুধু তুমি নেই পাশে।
প্রকৃতির মতো তুমিও নিশ্চুপ আমার গহীনে।
তবুও আসি প্রকৃতির সাথে করতে ভাগাভাগি,
আমার গহীনে থাকা কষ্ট গুলোর।

14/4/14

এলো বৈশাখ

""""এলো বৈশাখ """""



বৈশাখ এলো রাঙিয়ে ভূবন
জীবনে লেগেছে নতুন রঙ,
বৈশাখ এলো সাজিয়ে জীবন
প্রকৃতিতে এলো নতুন ঢং।

বৈশাখ এলো নিয়ে  বার্তা
জীবন হোক আজ জ্যোতির্ময়,
বৈশাখে হোক নতুন যাত্রা
জীবন হোক আজ আনন্দময়।

বৈশাখ এলো নিয়ে পূর্ণতা
জীবন হোক আজ শান্তিময়,
বৈশাখ এলো নিয়ে উচ্ছলতা
জীবন হোক আজ মুখরময়।

বৈশাখ এলো মুছতে  গ্লানি
ঝেড়ে ফেলে সব ব্যর্থতা,
বৈশাখ এলো সাজাতে ধরনী
মুছে ফেলে সব জীর্ণতা।

বৈশাখ এলো মুছতে পাতক
ধুয়ে ফেলে সব সংকীর্ণতা,
বৈশাখ এলো গড়তে দীপক
ধুয়ে ফেলে সব অসাড়তা।

বৈশাখে মোরা করি  শপথ
জীবনে আনব নব বারতা,
বৈশাখে মোরা সাজাবো রথ
মুছে দিয়ে সব কন্টকতা।

13/4/14

লিখতে চাই

লিখতে চাই 





একটি কবিতা খাতায় লিখতে
কলম নিয়েছি হাতে,
মনের রঙের রঙ তুলিতে
আল্পনা দিবো তাতে।

ভাবছি আমি ভাবনা কতই
অগোছালো সব ভাষা,
লিখছি আমি লিখতে চাই
আমার মনের আশা।

হয়না কিছুই হওয়ার মতো
যেমনটা আমি চায়,
হচ্ছে সবই হাওয়ার মতো
যেন উড়ে সব ছাই।

বুকের মাঝে কথার বাষ্প
ফুলে ফেঁপে শুধু উঠে,
কলমের আগায় শুধু ভস্ম
কিছুই আসে না ফেটে।

15/4/14

মনে কি পড়ে


"""""মনে কি পড়ে """""





মনে কি পড়ে,
শিশির ঝরা কুয়াশা সকাল?
যখন তুমি আমি হারিয়ে যেতাম,
সকাল রবির উষ্ণতায় শিশির মাখা দূর্বাঘাসে।

মনে কি পড়ে ,
গোধুলী মাখা পড়ন্ত বিকেল ?
যখন হারাতাম মোরা দূর দিগন্তে,
যেখানে পৃথিবী মিশে যেতো নীলিমায়।

মনে কি পড়ে,
জোৎস্না মাখা নিঝুম নিশি?
আলো জ্বালাতো রাত  জোনাকি,
তুমি আমি পাশাপাশি দীঘির ঘাটে।

মনে কি পড়ে,
ঝিরঝির বৃষ্টির বর্ষা বেলা?
তীব্র আবেগে আমরা হারিয়ে,
আনন্দ ছড়াতাম খেলে জল খেলা।

মনে কি পড়ে ,
প্রথম বৈশাখের আনন্দ ক্ষণ?
তুমি সাজতে বাসন্তী শাড়িতে হাতে চুড়ি,
আমি সাদা পাঞ্জাবি পাশাপাশি হাত ধরে হাটা।

14/4/14

আমার আকাশ

আমার আকাশ 





আমার আকাশ সাজিয়েছি আমি
মনের রঙের রঙ তুলিতে,
আমার আকাশ রাঙিয়েছি আমি
দুঃখ গুলোকে শূন্যে ভুলিতে।

আমার আকাশে এখনো উড়ে
শঙ্খচিল পাখনা মেলে,
আমার আকাশে এখনো উড়ে
কিশোরের ঘুড়ি মেলে।

আমার আকাশে তারা জ্বলে
জোৎস্না রাতে নিঝুম ক্ষণে,
আমার আকাশে জোনাক জ্বলে
কৃষ্ণ রাতে বিরস ক্ষণে।

আমার আকাশ রয়েছে এখনো
তোমার ফেরার আশায়,
আমার আকাশ চেয়েছে তখনো
তোমায় যখন হারায়।

আমার আকাশে স্বপ্ন আঁকি
তুমি এসে দেখবে বলে,
আমার আকাশ দেয়না ফাঁকি
তুমি এসে বকবে বলে।

আমার আকাশের কষ্ট গুলো
বৃষ্টি হয়ে ভেজায়  ,
আমার আকাশের সুখ গুলো
পাখি হয়ে উড়ে যায়।

আমার আকাশ করে  অপেক্ষা
তুমি ফিরে আসবে,
আমার আকাশ করবে প্রতীক্ষা
যতদিন শ্বাস থাকবে।

16/4/14

আধুনিক মান অভিমান


""""আধুনিক মান অভিমান """"'



এতো দিনে আমরা সম্পর্কের আট বছর পূরণ করেছি,
এই আট বছরে অনেক কিছুই হলো।
আমার প্রবাসে আসা,  তোমার স্কুলের চাকরি,
এমন কি আমাদের এ্যানগেইজমেন্টাও।
যদিও এখনো সংসার শুরু করতে পারি নি
তবুও আমরা একে অপরকে অনেক বুঝি।
মাঝে মাঝে সেই বোঝাপড়াটা
একটু ভুল বোঝাবুঝিতে রূপ নেয় এই আরকি।
এই যেমন তোমার আবদার
প্রতিদিনই ফোন করা অথবা পারতপক্ষে
দু তিন দিন বাদে ফোন করা,
যা আমার পক্ষে কখনো সম্ভব কখনো না।
এই নিয়ে তুমি প্রায়ই রাগ করো,
কিন্তু কি আর করবো, সবসময়
তোমার আবদার রক্ষা করা হয়ে উঠে না।
তার মানে এই নয়, আমি তোমাকে ভুলে গেছি,
কিংবা তোমাকে তাচ্ছিল্য করছি।
আসলে আমি এমনই, সবাই তো একরকম হয়না।
গতকাল তোমার সাথে অনেক কথা বললাম,
আমি খুবই আবেগ দিয়ে কথা বলেছি।
অথচ তুমি, কথা বললে সব ছাড়া ছাড়া।
আগে কবিতা শুনতে চাইতে আর এখন,
আমাকেই হয়তো শুনতে ইচ্ছে করছে না।
তোমার অভিযোগ সবসময়ই কল করা নিয়ে,
এত কথা বলে বলতো  কি হয় শুনি?
সবই তো তোমার প্যানপেনানি হিন্দি সিরিয়ালের গল্প।
এক ঘন্টা কথা বললে সেখানে
হৃদয়ের কথা কতটুকুই বা হয়?
হৃদয়ের অনুভূতি বুঝতে হলে
ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলার দরকার নেই,
অন্তত আমি তাই ই মনে করি।
জানো, কাল না খুব খুব রাগ হয়েছিল আমার,
আমি তোমাকে কত ভাবেই না
রাগ কমানোর চেষ্টা করছি।
অথচ, তুমি সেই যে মুখ ভার ভার কথা বলছ,
আমার কোন কথাই মন দিয়ে শুনলে না।
তাই তো কথার একেবারে শেষ পর্যায়ে
আমি মনে মনে ক্ষুব্ধ হলাম,
তবে সেটা প্রকাশ করলাম না,
শুধু বললাম,  "আমি রাখছি "।
এইবলে আমি ফোন রেখে দিলাম।
আমি খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছিলাম যে,
এবার তুমি কষ্ট পাবে।
এখনকার কষ্ট গুলো খুবই বিষাক্ত হবে,
যা তোমাকে প্রতিনিয়ত দংশিত করে
কষ্টের নীল সাগরে বিলীন করে দিবে।
আমারও খুব কষ্ট হলো,
কিন্তু কি করব আমি, তোমাকে তো
কোন ভাবেই বুঝাতে পারলাম না।
যাই হোক, মাঝে মাঝে মান অভিমান হওয়া ভালো,
এতে সম্পর্ক আরো অটুট হয়।
আশাকরি তুমি তোমার ভুল বুঝতে পেরেছ,
তাই তো তুমি বেশকয়েক বার মিস কল দিচ্ছ।
এবার যাই তোমাকে ফোন দেই,
বেশীক্ষণ মান অভিমান ধরে রাখাও ভালো না।

19/4/14

কবিতার দীর্ঘশ্বাস


"""""কবিতার দীর্ঘশ্বাস """"





একটি কবিতা মনে দেয় উঁকিঝুঁকি
লিখবো বলে আমি করি আঁকাআঁকি।
পারি না কিছুই ভাবনা দেয় ফাঁকি।
হয়না কিছুই শেষ লেখা থাকে বাকি।

মনেতে আছে কতো ভাবের আল্পনা
পারিনা কিছুই লিখতে করি যা কল্পনা।
মস্তিষ্কের ভিতরে কীটেরা করে জল্পনা
থরেথরে সাজায় অবসাদের আলনা।

বুকেতে চেপে থাকে জমাটবদ্ধ শ্বাস
কষ্টের ভাব গুলো করে হাসফাঁস।
পরিশ্রান্ত মনে ফেলি দীর্ঘশ্বাস,
হবে কি কবিতা,নেই  কোন আশ্বাস।

21/4/14

বৈশাখ এসেছে


""""""বৈশাখ এসেছে """"""



আজ ফুটেছে  কলি কাননে
আজ উঠেছে রবি গগনে
আজ তরঙ্গ উত্তাল বরুণে
আজ বইছে পবন  অরন্যে।

আজ বৈশাখ এসেছে এই  ধরনীতে।

আজ লেগেছে হাওয়া প্রাণে
আজ সময় কাটাবো গানে
আজ মাতবো প্রিয়ার সনে
আজ হারাবো আপন মনে।

আজ বৈশাখ এসেছে এই ধরাতে ।

আজ দূর হয়ে যাক সব হতাশা
আজ উঠুক নব প্রাণের আশা
আজ শুরু হোক কবির ভাষা
আজ সবার তরে হোক ভালবাসা।

আজ বৈশাখ এসেছে এই পৃথিবীতে।

আজ চলো সবাই স্বপ্ন দেখি
আজ সকল মানুষ হোক না সুখী
আজকে আমারা কেউ নই দুঃখী
আজ উড়িয়ে দাও প্রাণের পাখি।

আজ বৈশাখ এসেছে এই জগতে।

আজ ছুড়ে ফেলো সব জীর্ণতা
আজ বাড়ুক মনের পবিত্রতা
আজ ঝেড়ে ফেলো সব শূন্যতা
আজ বাড়ুক মনের ব্যকুলতা।

আজ বৈশাখ এসেছে এই অবনীতে।

13/4/14

তুমি আমার পরান পাখি


""""তুমি আমার পরান পাখি """'





তোমায়  নিয়ে স্বপ্ন বুনি
তোমার আশায় দিন গুনি,
তোমায় নিয়ে আঁকি ছবি
তুমিই আমার প্রেমের কবি।

তোমার মনেতে মন বাঁধি
তোমার সুরেতে গান বাঁধি।
তোমার ছায়ায় নিজেরে দেখি
তোমার মায়ায় নিজেরে আঁকি।

তোমার দেখাতে চন্দ্র দেখি
তোমার আবেশে জোৎস্না মাখি।
তোমার হিয়াতে নিজেরে রাখি
তুমিই আমার পরান পাখি।

21/4/14

নিওনা কষ্ট মোর অভিমানে


""""" নিওনা কষ্ট মোর অভিমানে ""





কখনো যদি ব্যথা দিই ঐ মনে,
কান্না হয়ে বাজে তা ক্ষণে ক্ষণে।
তোমার ভালবাসা রয়েছে গহীনে,
হারাবে না ভালবাসা যদিও মরণে।

তাই ভুলে গিয়ে সব মান অভিমান
তোমাকেই ভালবাসতে চায় আপ্রাণ।
ভালবাসার গভীরে দিও মোরে স্থান,
তোমাকেই ভালবেসে যায় যেন প্রাণ।

করছি তোমার জন্য হাজারো অপেক্ষা
করবো তোমার জন্য আমৃত্যু প্রতীক্ষা।
তোমারই ভালবাসায় পেয়েছি দীক্ষা,
তুমি ছাড়া আমায় কে করিবে রক্ষা।

জানি দিয়েছি তোমায় অনেক কষ্ট
মাঝে মাঝে মন হয়ে যায় কেন ভ্রষ্ট?
জেনে রেখো ভালবাসি তোমায় স্পষ্ট,
ভালবেসে তোমায় হই আরো আড়ষ্ট।

21/4/14

নিওনা কষ্ট মোর অভিমানে


""""" নিওনা কষ্ট মোর অভিমানে ""





কখনো যদি ব্যথা দিই ঐ মনে,
কান্না হয়ে বাজে তা ক্ষণে ক্ষণে।
তোমার ভালবাসা রয়েছে গহীনে,
হারাবে না ভালবাসা যদিও মরণে।

তাই ভুলে গিয়ে সব মান অভিমান
তোমাকেই ভালবাসতে চায় আপ্রাণ।
ভালবাসার গভীরে দিও মোরে স্থান,
তোমাকেই ভালবেসে যায় যেন প্রাণ।

করছি তোমার জন্য হাজারো অপেক্ষা
করবো তোমার জন্য আমৃত্যু প্রতীক্ষা।
তোমারই ভালবাসায় পেয়েছি দীক্ষা,
তুমি ছাড়া আমায় কে করিবে রক্ষা।

জানি দিয়েছি তোমায় অনেক কষ্ট
মাঝে মাঝে মন হয়ে যায় কেন ভ্রষ্ট?
জেনে রেখো ভালবাসি তোমায় স্পষ্ট,
ভালবেসে তোমায় হই আরো আড়ষ্ট।

21/4/14

কবিতার সৃষ্টি কথা

""কবিতার সৃষ্টি কথা """"




আমার দিনের সার্থকতা
যদি লিখতে পারি একটি কবিতা
আমার রাতের নিমগ্নতা
লিখতে একটি ভালো কবিতা।

আমার সন্ধ্যার ব্যকুলতা
যদি হয় সৃষ্টি থেকে নিরবতা।
জোৎস্নার পানে আকুলতা
হোক না সৃষ্টি থেকে ভাবুকতা।

বর্ষার পানে রোমাঞ্চকতা
শত প্রচেষ্টায় যদি মেলে সফলতা।
আকাশের পানে উদারতা
যদি হয় একটি প্রেমের কবিতা।

পুষ্পের পানে নিবিড়তা
আসে যদি একরাশ মিষ্টি মাদকতা।
তটিনীর পানে স্থিরতা
মনে জমাতে একটু বিরহ ব্যথা।

অরণ্য পানে নিবদ্ধতা
হোক সুরে একটু মূর্ছা গাঁথা
পর্বতের পানে নিবিষ্টতা
হোক না সৃষ্টি সাথে চারুতা।

21/4/14

কবিতার বিরস ক্ষণ

""""" কবিতার বিরস ক্ষণ """





কবিতায় নেই কোন ছন্দ
কবিতায় নেই আর আনন্দ।
হৃদয়ের চোখ আজ  অন্ধ
কবিতা হয়ে আসে বন্ধ।

কবিতায় আজ নেই  মায়া
কবিতায় নেই প্রেমের ছায়া।
কবিতা হারিয়েছে তার খেয়া
কবিতা হয়ে উঠে কৃষ্ণকায়া।

কবিতায় খুঁজি নিজেকে আমি
কবিতা হয়েছে মোর অন্তর্যামী।
কবিতায় পায় মোর জীবনী
কবিতাতেই পার হয় মোর যামিনী।

16/4/14

তুমি চেয়েছ বলে

""তুমি চেয়েছ বলে """





তুমি চেয়েছ বলে
আমি স্বপ্ন বুনি রাতের নিঝুম বুকে,
তুমি চেয়েছ বলে
আমি তরী ভাসায় প্রমত্তা নদীর বাঁকে।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি সিংহল সমুদ্র দূর্মরে দেয় পাড়ি।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি অরন্য বুকে নিভৃতে বানায় বাড়ি।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি ঘোর বর্ষার মাঝে করি উদ্দাম নৃত্য।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি হয়েছি তোমার একান্ত অনুগত ভৃত্য।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি মরুভূমির বুকে রোপী ফসলের বৃক্ষ।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি উড়িয়া বেড়ায় সমগ্র অন্তরীক্ষ।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি কামনা বাসনা সঁপেছি তব পদতলে।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি ক্রোধ উদ্মাদনা পিষিয়াছি মোর পদতলে।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি ভূধর মাড়িয়া করেছি তৃণ সমতল।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি হুংকার ছাড়ি ডরায়েছে মনব সকল।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি চুমুকে চুমুকে চুষিয়াছি তব ওষ্ঠ।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি ধরণীতে হতে চায় মানবের তরে  শ্রেষ্ঠ।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি ঐশ্বর্য ছাড়িয়া আসিয়াছি গাছ তলায়।
তুমি চেয়েছ বলে
আমি কৃষ্ণাঙ্গরে বাঁধিয়াছি প্রেমের মায়ায়।

তুমি চেয়েছ বলে
আমি তোমার মাঝে ভালবাসা খুজেঁ বেড়ায়,
তুমি চেয়েছ বলে
আমি ভালবাসিয়া যাব জীবনেরও শেষ বেলায়।

22/4/14

"মিশে একাকার প্রকৃতিতে


""মিশে একাকার প্রকৃতিতে """

নিঃসীম সীমান্ত,
দৃষ্টির সীমানার অগোচরে
যেখানে আকাশ ও পৃথিবীর নিবিড় বন্ধুত্ব আলিঙ্গনে ;
সেখানেই হবে আমাদের ভালবাসার প্রদীপ জ্বালা,
প্রগাঢ় ভালবাসার স্বচ্ছ আবেশে দুজনের হবে বন্ধন।

নিস্তব্ধ রাতের প্রকৃতিতে
কৃষ্ণ আকাশের বুকে চলে  লীলা খেলা -
ঘুমহারা তারার মাঝে মিট মিট করে জ্বলা জোনাকীর সনে,
আমাদের ঘর হবে তারাদের বুকে
রাতে জ্বলা জোনাকির আলোর চাদরে।

বিস্তৃত সবুজ সমারোহে
নিঝুম অরন্যের গহীনে বসে প্রকৃতির মেলা -
বিহংগের মিষ্টি কিচিরমিচির কলরব
সৃষ্টি করে হৃদয় হরণকরা প্রেমের সুর ;
শুনশান সবুজের বুক জুড়ে শুকনো পাতার আল্পনা,
আমাদের বাসরের বিছানা হবে প্রকৃতির কোমল কোলে
নীবিড় বন্ধনে ঘনিষ্ঠ প্রেমময় কামুকী চুম্বনে ।

11/8/14


হারিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে



""   হারিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে ""

রাত্রির কৃষ্ণ প্রহর শেষে -
ভোরের আলোতে উজলা হয় পৃথিবীর চারিধার।
রবির প্রথম আলোয় চিকচিক করে উঠে
দূর্বাঘাসের 'পরে বীর দর্পে দাড়িয়ে থাকা
বিগত কুয়াশার জল।
নিস্তব্ধ প্রকৃতিতে বয়ে যায় হিমেল হাওয়া,
শনশন শব্দে আন্দোলিত হয় সবুজ প্রকৃতি।
পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠে
ভোরের মিষ্টি পরিবেশ ;
পৃথিবীতে সূচনা হয় আরেকটি নিষ্পাপ দিনের।
এমন সুন্দর দিনের শুরুতে
মন চায় তোমাকে নিয়ে হারিয়ে যেতে দূর অজানার সবুজের গায়ে।
নগ্ন পায়ে তুমি আমি আর দূর্বার জল
হবো একাকার প্রকৃতির প্রেমে।
শিশিরের প্রথম ছোঁয়ার তড়িৎ স্পন্দনে
শিহরিত হবে আমাদের অন্তঃস্থল।
কোন কথা নয় শুধু সবুজ সাগরে অবগাহন,
এমনি ভাবে কেটে যাক সহস্র প্রহর।
শুধু দুজন দুজনার হাত ধরে এগিয়ে যাওয়া নীল আকাশের ধূসরদিগন্তের পানে।

26/8/14


ভোরের মিষ্টি ভালবাসা



"""" ভোরের মিষ্টি ভালবাসা """

রাত্রির শেষ ভাগ যখন ভোরের দিকে ধাবিত হয় -
মুয়াজ্জিনের সুরেলা আজানে পবিত্র হয় পৃথিবীর বুক।
সুন্দর পাখিডাকা সকাল গ্রাস করে
বিগত রজনীর অন্ধকার ;
সৃষ্টিকর্তার অশেষ করুণার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন শেষে -
বেহেস্তী মৃদুমন্দ হিমেল হাওয়া
খেতে খেতে আসব যখন ঘরে -
দেখতে পাবো তোমায় রান্না ঘরে চায়ের কেতলির পাশে।
তোমার মিষ্টি চায়ের অপেক্ষায় -
হালকা চোখ বুজে রইবো বারান্দার দোল চেয়ারে।
তোমার চুরির শব্দে আর চায়ের মধুর ঘ্রাণে
আলতো চোখ তুলেই দেখবো তোমায় নিষ্পলক দৃষ্টিতে।
ধোঁয়া তোলা চায়ের সাথে তোমার মিষ্টি হাসি -
আমার আবেগী শান্ত মনে হবে নতুন ভালবাসার সৃষ্টি।
মনে হবে এখনো রয়েছে ভালবাসার হাজার দূরত্ব বাকি,
চায়ের কাপের সাথে তোমায় আলতো ছুঁতে চাইলে,
দুষ্টু মাখা মিষ্টি হাসি হেসে হবে আড়াল তুমি ;
তোমার সেই দুষ্টু মাখা মিষ্টি ভালবাসা
পাওয়ার প্রতীক্ষায় থাকতে পারি আজীবন ।

16/8/15


তৃণলতার জীবনাবসান


""""" তৃণলতার জীবনাবসান """


এইখানে,
বাংলার শ্বাশত জমিনের বুকে
বেঁচে থাকা তৃণভূমির কথা বলছি।
যেখানে কচি তুলতুলে লতার সাথে বিয়ে হয়
বিশাল বট বৃক্ষের ;
যাতে সে পায় একটি শক্ত আশ্রয়স্থল।
কিন্তু বৃক্ষের খসখসে বুকে চলে কোমল লতাটির হাঁসফাঁস -
প্রকান্ড বৃক্ষের মস্তকের উপর যখন উড়ে যায় এক খন্ড কালো মেঘ,
তখন লতাটি হেসে উচ্ছ্বসিত হয় বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতে ভিজবে বলে।
আর বৃক্ষ তাকে শাসিয়ে দেয়
তার ছড়ানো ডালে নিজেকে গুজিয়ে থাকতে।
বৃক্ষ মরু হৃদয়ে চাইতে আসে লতার কাছে কামনা বাসনা,
অথচ লতাটির মনে পড়ে -
এখনো দেওয়া হয়নি তার পুতুল মেয়ের বিয়ে
যোগ্য পাত্র পাওয়া হয়নি বলে।
এইখানে,
তৃণটি পায় না ভালবাসা,
পারে না নিজের ইচ্ছেমত দুদন্ড দাড়িয়ে
দক্ষিণা হাওয়ার সাথে বলতে অব্যক্ত কথন।
যখনই অসহায় গোপন মনে আকাঙ্ক্ষা জাগে
অরন্যের হিমেল হাওয়ায় নিজেকে বিলিয়ে
উড়ে বেড়াবে আকাশের যেখানে শেষ ঠিকানা ;
কিন্তু তার আগেই নিজের গহীনে আবিস্কার
করে তারই এক নতুন অস্তিত্বকে।
এভাবেই সে যখন বড় হয়,
বুঝতে পারে বৃক্ষের বুকে থাকা প্রেম ভালবাসা,
তখন বৃক্ষটি বয়সের ভারে হয়ে পড়ে নুজ্জ্ব ;
লতাটির বুকে কি দূর্দমনীয় কামনা বাসনা
তা বুঝতে সে হয়ে পড়ে অপারগ।
আর এভাবেই বিলীন হয়ে পড়ে লতার বুকে
জমে থাকা সহস্র রাত্রির স্বপ্নের মোড়ানো রঙিন আশা।

18/8/14


তুমি ছাড়া সর্বহারা


""তুমি ছাড়া সর্বহারা ""

এখন আমি আকাশ দেখিনা,
বৃষ্টির পরে নীল জমিনে রঙধনুর সাজ দেখিনা ;
মেঘের ওপারে তেপান্তরের ঐ সীমানায় সুখ খুঁজিনা।
যে আমাকে আকাশ চেনালো
আকাশ মাঝে সুখ দেখালো
সে -ই যখন আমায় চেনেনা,
আমি এখন ঐ আকাশে দুঃখ ছাড়া কিছুই খুঁজিনা।

এখন আমায় সবুজ টানে না,
শিশির ভেজা দূর্বায় আঁকা পথটিতে আরযাওয়া হয়না ;
অরন্যের মাঝে সবুজ চাদর এখন আর ভালো লাগেনা।
যে আমার বুকে সবুজ জমালো
অরণ্য মাঝে ঘর বাঁধালো
সে -ই যখন দূরে সরলো
অরন্যে বুকে সবুজ আঙিনায় কষ্ট ছাড়া কিছুই পাইনা।

এখন আমি জোৎস্না মাখিনা,
ভরা যৌবনের চাঁদের আলোতে রাত্রি আর জাগা হয়না ;
জোনাক জ্বলা নিশির প্রহর আমায় আর ভালবাসে না।
যে আমাকে চাঁদ চেনালো
জোনাক আলোতে ঘুম শেখালো
সে -ই যখন ভালবাসে না,
চাঁদের আলোয় জোৎস্না প্রহরে কান্না ছাড়া কিছুই আসে না।

এখন আমি কবিতা লিখি না,
বসন্ত বাতাসে পুষ্পকাননে আমার আর ভাব জমেনা,
পাহাড় বুকে ঝর্ণার সুর কিছুই আমার কবিতা হয়না,
যে আমাকে ভাবের মাঝে ছন্দ দিতো
যায় ছোঁয়ায় পংক্তি গুলো কবিতা হতো
সে -ই যখন কবিতা শুনে না,
কবিতার মাঝে বর্ণ ছাড়া আমি আর কিছুই দেখি না।

25/8/14


বিন্দু থেকে শূন্যের অপেক্ষা


"""" বিন্দু থেকে শূন্যের অপেক্ষা """

মায়ের জঠরে অন্ধকার গৃহে যখন ছিলাম -
ছিলো আলোতে বেরিয়ে  আসার সুতীব্র  অপেক্ষা।
সুমিষ্ট  চিৎকারে যখনই আলোর মুখ দেখলাম -
তখনই অপেক্ষা মায়ের ভালবাসার স্তনের ;
মায়াময় জগতে এসেই অপেক্ষা,
কখন দাড়িয়ে বলবো আমি তোমাদেরই একজন।
কৈশোরে রঙিন প্রজাপতির পাখনা দেখে
আকাঙ্খা জাগতো কখন উড়ব মুক্ত বলাকার মতো।
প্রমত্ত যৌবনে পা দিয়ে অপেক্ষায় থাকতাম
কোন সুপর্ণমতী মায়াবী হাতছানির ;
জাগতিক নিয়মে কারো বাহুবন্ধনে আবদ্ধের পালা শেষ হলে -
নতুন করে অপেক্ষার দিক উম্মোচন,
কিভাবে নতুনকে দিব এক স্বাচ্ছন্দময় বসুন্ধরা।
আলো আঁধারির বিশুদ্ধ অবনীর সার্বজনীন
আকাঙ্খায় সময় হয় জীবনকে অবসর দেওয়ার ;
এখানেই শেষ নয় -
শুরু হয় নতুন করে এক অপেক্ষা,
কখন নিবো বিদায় এই মায়ার বন্ধনে আবৃত
পিছুটানকে পিছনে ফেলে -
অনাগত অনিশ্চিত কল্পলোকের ভেলায় পাড়ি দেওয়ার।

12/8/14


এক টুকরো স্বর্গীয় ভালবাসার সুখ


""এক টুকরো স্বর্গীয় ভালবাসার সুখ ""

    সাখাওয়াৎ আলম চৌধুরী

দূর্বিষহ যন্ত্রণার পৃথিবীতে যখন
নিস্তব্ধ রাত্রির প্রান্তর হয় ভোর,
ঊষার আলোর সাথে সাথে প্রস্ফুটিত হয়
পৃথিবীর খেয়াহীন মায়ার মায়াবী ধূসর রূপ।
চারদিকে হাহাকার মানুষের নিরব ক্রন্দন,
হয় বেচাকেনা ভালবাসা
নগন্য আবেগের রতিভোগের দরে ;
অর্থহীন আজ,  হাড়ভাঙা কষ্টের ঘামে
উপার্জিত অর্থে তুলে দেয়া সন্তানের মুখে অন্ন।
ভুলে যায় অতীত, হঠাৎ জোয়ার আসা যৌবনের বানে ;
চলে যায় নাড়িকাটা ধন ধোঁয়াশার হাতছানির দিকে।
এখানে ভুলে যায় শতরাত্রির সহবাসের প্রহর,
দিব্যমান পূর্নিমার চন্দ্রের চাইতে প্রিয় হয়
সুদূর নিহারীকাপুঞ্জের আলোকরাশি।
হয় ছিন্ন আজন্ম গড়ে উঠা সম্পর্কের ;
চলে যায় পথিক,  আগন্তুকের হাত ধরে মরিচিকার পানে,
পিছনে পড়ে থাকে হাজারো মধুর আলিঙ্গনের ফসল।

পৃথিবীর নগ্ন কদাকার মরিচিকার রূপ দেখে
ভয়ে আমি কুঁকড়ে যায়,
হৃদস্পন্দন থেমে গিয়ে হয়ে পড়ি অসাড় মস্তিষ্কশূন্য ;
বুকের গহীনে লালিত স্বপ্নের গোড়ায় -
যেখানে প্রতিনিয়ত দেই ভালবাসার সেচ,
ভয় হয় সেই স্বপ্ন আদৌ দেবে কি ধরা বসুধার বুকে?
চারিদিকে উদ্ভ্রান্ত সম্পর্কের দিকে তাকিয়ে
বড় ইচ্ছে করে,  তোমায় ধরি আকঁড়ে আরো
শক্ত করে নিবিড় ভালবাসার মন্ত্রে ;
তোমার বুকের মকমল বিছানায় প্রেমের
চাদরে আমি ঘুমোতে চাই,
দেবে তো জরাজীর্ণতার বসুন্ধরায়
এক টুকরো স্বর্গীয় প্রেমের সুখ,  তোমার নিরাপদ বুকের ভালবাসার জমিনে?

25/8/14


মৃত্যুর প্রতিচ্ছবি


এই শহরে মৃত্যুর দূতেরা হাওয়ার সাথে ভেসে বেড়ায়।
তাদের উচ্ছৃঙ্খল পদধ্বনি শুনতে পাই
পৃথিবীর পথে প্রান্তরে হাজারো মানুষের লোকারন্যের ভীড়ে।
নিঃশঙ্ক চিত্তে তারা মিশে যায় মানুষের
শরীরে প্রতিটি নিঃশ্বাসের সাথে বিষাক্ত বায়ুর আবরণে।
আমি দেখেছি মৃত্যুর তীক্ষ্ণ চাহনি সেই যুবকের মাঝে -
যে শহরের সন্ধ্যার নিয়ন আলোতে সুখ খুঁজে বেড়ায়
নিষিদ্ধ গলির মরিচিকার কামনার ভীড়ে।
মৃত্যু তাচ্ছিল্যের অট্টহাসিতে এগিয়ে যায় বীরদর্পে
সমাজের তরুণ প্রজন্মের প্রিয় 'বাবার '
একটান অগ্নির ধোঁয়ার মরণ নিঃশ্বাসের গহীনে।
মৃত্যু, সে ছুটে চলে নেশাগ্রস্ত ট্রাকের চাকার তলে,
খুঁজে বেড়ায় নিষ্পাপ সন্তানের প্রিয় মুখ ;
কেড়ে নিতে তাকে বিকৃত শরীরে ফিরিয়ে দিতে।
আমি দেখি মৃত্যুর গ্রহন লাগা ছায়া
কর্মরত অবলাদের ইমারতের সুক্ষ্ম ফাটলের মাঝে।
সুদীর্ঘ তৃষ্ণার্ত মৃত্যু তার পিপাসা মিটায়
অতল জলের ' পরে অনিশ্চিত ভাগ্যের পানে
ধেয়ে যাওয়া অসহায় মানুষকে গিলে।
অহর্নিশ মৃত্যু টোঁপ ফেলে কাঁটাতারের বিভাজন রেখার 'পরে,
চরিত করে তার বাসনা বুলেটের বিশ্বস্ত মরণ চুমুকে।
মৃত্যু দাঁড়িয়ে থাকে এই শহরের ফুটওভারব্রিজ আগলিয়ে,
চেয়ে থাকে নিরন্তর ভাগ্যহীন মানুষের পানে সহসাই ঝাপিয়ে পড়তে।
এই শহরে হেটে বেড়ায় নিশ্চিন্তে আপনমনে
প্রতিনিয়ত পালন করে বিধাতার আদেশ চাহিদার সাথে।

20/10/14

কবিতায় নারী আঁকা এখন পাপ



""কবিতায় নারী আঁকা এখন পাপ ""

কবিতায় আর প্রেম ধরা দেয় না
প্রেয়সীর তরে উপমায় আর ভাব আসে না ;
কোন উপমায় তুলে আনব
কামিনীর ডাগর দেহপল্লবীর রূপ? 
যখন দেখি এখনো আর্তনাদ বঙ্গভূবনে 
নিরন্ন বস্ত্রহীন কঙ্কালসার মানুষের গহীনে ।
কি করে করব প্রসংশা জোৎস্না মাখা রূপোর আলোয়
প্রেমিকার ফিনকি ঝরা রূপ ঐশ্বর্যের?
যখন বিদগ্ধ এসিডের ছোঁয়াতে
সোনার অঙ্গ অঙ্গারিত হয় অবলা হাজারো নারীর,
আর উচ্ছৃঙ্খল যুবকের অট্টহাসিতে প্রকম্পিত এই বাংলার বাতাস।

কি করে করব চুম্বন কবিতায়
রমনীর নেশা লাগা কামুকী ঘাড়ে?
যখন সমাজ আর প্রযুক্তির অনিয়ন্ত্রিত  নির্যাতনে
অবুঝ কিশোরী গলায় ঝুলে অমানবিক মৃত্যুর শিকল।
কোন ভরসায় মিথিলাকে দেখাব
ভালবাসার স্বপ্নের সোনালী কুঠির?
যখন হাজারো শিক্ষিত যুবকের স্বপ্ন হারিয়ে
যায় মরিচিকার বেকারত্বের পদকে।
কি করে প্রিয়তমাকে নিয়ে হারিয়ে যাব
কবিতায় কোন এক স্বর্গীয় ভূবনে?
যখন এই বাংলার ভূবন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে
দূর্নীতি আর দখলদারিত্বের মাকড়জালে।
কিভাবে আঁকবো কবিতায় আগামী প্রজন্মের নির্মল প্রকৃতি?
যখন এই প্রজন্মের সন্তানেরা বুদ হয়ে আছে
ইয়াবা ফেনসিডিল হেরোইনের মৃত্যুর বিছানায়।

আমি আর রমনীর স্নিগ্ধ অধর দেখি না,
দেখি না স্বপ্ন কোন মিছে স্বর্গীয় উদ্যানের,
কলমে আর আসেনা কবিতা অঙ্গনাদের নিয়ে,
এইই কলম ছুটে যায় লিখতে
নির্যাতিতাদের সেই তিমির আলোয় মাখা
অন্ধকার গহ্বরে করুন ইতিহাস ;
ছুটে যায় সেই স্বপ্নের পানে ছিনিয়ে আনতে
হাজারো যুবকের স্বপ্নের সোনার হরিণ।
আমার কলম ফুল হয়ে শোভা পায়
মৃত্যুর কাছে পরাজিত সৈনিকের কবরে।
আমার কলম আজ হতে চায় ক্ষুধার্তদের
খাবার আর বস্ত্রহীনদের আবরণ চাদর,
এই কলম হাসি ফোটাতে চায় হাতাশাছন্ন সেইসব
ফুলের কলিদের, যারা নেশার ধূসর স্বপ্নে
হারিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর মায়া থেকে।
এই কলমে নারীর রূপ আঁকা এখন পাপ,
এই কলমে বাংলার নতুন রূপ আঁকার অঙ্গীকার করি।

30/9/14


রবিবার, ১৭ মে, ২০২০

শতাব্দী অবধি যে পথচলা


""শতাব্দী অবধি যে পথচলা ""

    সাখাওয়াৎ আলম চৌধুরী

কড়ির উপর কড়ি সাজাবার বয়স থেকেই মেয়েটি ছিলো চঞ্চল।
উদ্মাদনা, হাস্যজ্জ্বল সাদামাটা ছিলো তার জীবন ;
মনের গহীনে ছিলো তার ছোট্ট ছোট্ট কিছু স্বপ্ন,
যা তাকে অহর্নিশ ভাবিয়ে রাখত মরিচিকার হাতছানির মত।
জীবনের রঙিন অস্থির সময়ে হয়তো কেউ
নিয়েছিল ঠাঁই তার স্বপ্নের রাজ্যের ছোট্ট  আঙ্গিনাতে।
তবে জীবন কারাগারে নিয়তির টানে
তাকে ঝুলতে হলো কোন এক বিষন্ন বটের গলায়।
সবকিছু পাওয়ার মাঝেও যদি বন্দীত্ব থাকে,
তবে সেটি হবে পৃথিবীর নিগৃহীত বন্দীশালা।
মেয়েটি পারে না সবকিছু নিজের করে নিতে -
যেখানে সমাজ তাকে পড়িয়ে দেয় শিকল নির্দিষ্ট সীমানার অঙ্গনে।
পৃথিবীর স্বর্গীয় সুখ বুঝার আগেই
কোলজুড়ে চলে আসে তার অস্তিত্বের একটুকরো ভালবাসা।
নিজের ইচ্ছে আকাঙ্খার সেই ধূসর নীলিমায়
হারিয়ে যাওয়ার একান্ত অনুভূতি গুলোর হয় সলিল সমাধি।
রিক্ত হৃদয়ে নরককুণ্ডে আত্মরতি উর্ণার আড়ালে
বয়ে চলে সে নিজের জীবন্ত লাশের দেহ।
হাজারো বিষন্ন গোধূলি পার করে টিকে থাকে
বুনো বাসনার অনিচ্ছার উদ্বেল স্রোতের বিপরীতে।
নিস্তব্ধ মৃত শশ্মান রাত্রি মাড়িয়ে
কুয়াশা মেঘের আড়ালে সূর্যের কিঞ্চিত রশ্মি তাকে আশা জাগায়।
সুপ্ত মনের মাঝে ছোট্ট একটি স্বপ্ন উঁকি দেয় ;
শৃঙ্খলিত সমাজে সে যা পারেনি -
তাই সে জয় করতে চায় তার সন্তানকে ঘিরে।
আর এটাই শ্বাশত বাংলার নারীদের একটি জীবন,
যেখানে সবকিছু হারিয়ে সামান্য খড়কুটো
আঁকড়িয়ে বাংলার ললনারা বেঁচে আছে শতাব্দীর পর শতাব্দী।

29/10/14


একটি মুখরোচক সংবাদ



" একটি মুখরোচক সংবাদ "


সাখাওয়াৎ আলম চৌধুরী

আমি একটি শাবক মৃতদেহ বলছি।
কোন এক পাষাণ্ড নরকীটের বীভৎস
কামনার বলি হতে হলো আমাকে।
পরিচয় দেওয়ার মত কিছুই নেই আমার ;
তবে এখন আমি পরিচিতি পাবো,
মিডিয়ায়, পত্র -পত্রিকায় ছবি যাবে আমার।
যার নীচে লেখা থাকবে -
"নরপশুর হাতে ধর্ষিত দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী রাহেলা। "
আমি রাহেলাই হই আর রেহানা -
এই সমাজের কিছুই যায় আসেনা।
সবার কাছে আমি একটি মুখরোচক সংবাদ ছাড়া কিছুই নই।
প্রতিদিনের পত্রিকায় এমন দু একটি শিশু ধর্ষণের
খবর যেন নিত্যনৈমিত্তিক একটি ব্যপার।
এই সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে হাজারো নরপশু লুকিয়ে আছে,
যারা প্রতিনিয়ত ওৎপেতে থাকে শকুন দৃষ্টি নিয়ে।
তাদের নিকৃষ্ট জৈবিকতা মেটাতে
এই বাংলায় লাশ হতে হয় নাম না জানা কত নিষ্পাপ শিশুদের।
এই সমাজ সবই দেখে সবই জানে,
তবুও এই সমাজে এর কোন প্রতিকার নেই।
তাই প্রতিদিনের মত আমি একটি সংবাদের লাশ ছাড়া কিছুই নই।

28/10/14


জ্বরাতিসার ভূবনে পথচলা


""জ্বরাতিসার ভূবনে পথচলা ""

      সাখাওয়াৎ আলম চৌধুরী

নিষ্ঠুর নরলোকের প্রতিটি বাঁকে
অহর্নিশ সাক্ষাৎ নির্দয়তার সাথে ;
ব্যস্ততার মায়াহীন পান্থশালার প্রতিটি মুহূর্ত,
যেন এক একটি শরাবের পেয়ালার চুমুক।
সুখ যেন মরিচিকার পিছে গন্তব্যহীন সাগরে অবগাহন ;
আর কষ্ট! সেতো দেবতার লক্ষী হয়ে
নিরবিচ্ছিন্ন শাঁখার ছায়ায় অনুসরণ।
জরাজীর্ণ সম্পর্ক গুলোতে প্রতিনিয়ত ঘটে
রক্তক্ষরণ নিরব ঘাতকের মতো।
অতি উচ্চাশার হাতছানির হতাশার জালে
আটকা পড়ে মানুষ মকড়শার শিকারের মতো।
গলায় রুদ্ধ হওয়া খাদ্যের মতো হাঁসফাঁস
করে উঠে অন্তঃস্থল ;
বিদীর্ণ পৃথিবীর কন্টকিত পথে
নিজেকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কীটের ন্যায় মনে হয়।
একদা উজ্জ্বল অন্তঃপুর হয়ে পড়ে
বদ্ধ আঁধারের নিরব কবর ;
নিরন্তর কষ্টের স্রোতে গড়িয়ে পড়ে শান্ত কান্নার ফোয়ারা।
তুচ্ছ জীবনকে বয়ে চলা হয়ে পড়ে অর্থহীন ;
প্রচ্ছন্ন আলোকে বাড়ে ভীতি বারবার হারাবার যন্ত্রণায়।
তবুও মর্ত্যলোকে বয়ে যায়  আমাদের
গন্তরহীন নিরাশার অভিশপ্ত জীবন ;
হাজারো মর্মান্তিকতায় মরিচিকার অবনী থেমে থাকে না,
চলতে থাকে সে নিজের অসাড় ভঙ্গিতে।
তার কোন দায় নেই তোমার আমার
অব্যক্ত  কষ্টের কারণ অনুসন্ধানের ;
তাই কি লাভ হবে ঐ লোনা জল ঝরিয়ে,
যেখানে আপন নয়নও তোমায় বুঝে না।
তারচেয়ে ভোরের সূর্যের আলোতে তাকাও
দিগন্তের ঐ নীলিমার পানে,
দেখবে হাজারো পাখি উড়ে যায়
অজানার উদ্দেশ্যে বিরামহীন নির্মল ক্লান্তিহীন ভঙ্গিতে,
নেই কোন পিছুটান সম্মুখে চলার গন্তব্যে।
ঠিক সেইভাবে চলতে হবে
এই জ্বরাতিসার ভূবনের কন্টক বুকে।

26/8/14

এই লেখাটি লেখা হয় রুবির একান্ত কিছু কষ্টের স্বরনে। যখন কষ্টের বাঁধভাঙ্গা স্রোতে দুকূল ছাপিয়ে বেড়িয়ে এসেছিল তার নীল বেদনার নির্বাক অস্রুর ফোয়ারা। তার সেই বেদনাবিদ্ধ সময়ে তাকে নগন্য সান্ত্বনার প্রচেষ্টা।


""যে তরুনেরা স্বপ্ন ছিনিয়ে আনে ""


""যে তরুনেরা স্বপ্ন ছিনিয়ে আনে ""

সভ্যতার বুক চিড়ে প্রকৃতির ইশারায়
প্রমত্তা উজানে ভেসে যায় বাংলার ভিটেমাটি।
চারদিকে হাহাকার উন্মত্ত বন্যায়
ডুবে যায় গরীবের শেষ সম্বল ;
যেদিকে তাকাই ধুধু বিস্তৃত ভূমি
তলিয়ে গেছে তেড়ে আসা আগ্রাসী বানে।
ঠাঁই নেই কিছু নেই, নেই কোন আশা,
চারপাশে উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটে চলা ;
কেউ নেই, কারো আশা নেই, সবাই ব্যস্ত
নিজেরে নিয়ে নশ্বর ভূবনে স্বার্থপর আঙিনায়।
মানবতা ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠে,
ক্ষীণ অস্ফুট শব্দ উড়ে আসে বিপন্ন নিরন্ন
বাস্তুহারা বানভাসি অসহায় মানুষের হৃদস্পন্দন ছুঁয়ে।
সেই ক্ষীণ আর্তনাদ এসে বিঁধে যায় কিছু
স্বপ্নবাজ তরুণদের কর্ণ ভেদ করে তাদের হৃদয়ে।
যারা স্বপ্ন দেখে, যারা স্বপ্ন দেখায়,
যারা স্বপ্ন ছিনিয়ে আনে হাজারো বাধার প্রাচীর ভেঙে,
যারা বানায় বাড়ি খরকুটোকে আশ্রয় করে
একবুক ভালবাসা দিয়ে পৃথিবীর 'পরে।
তারা আমাদের সন্তান, যারা মৃত্তিকার ধূলোয়
দেখে আকাশসম বাস্তবতার উপাখ্যান।
তাদের কন্ঠে প্রতিনিয়ত ধ্বনিত হয়
মননশীল জাগরণে পরিবর্তিত নতুন এক অবনীর।
তারা থেমে থাকে না এতো বাস্তবতার প্রতিবন্ধকতাতেও,
তারা এগিয়ে যায় একবুক আশা নিয়ে
সেই অসহায় মানুষের দিকে।
কিছু নেই শুধু শূণ্য থেকেই পথচলা,
তারা স্বপ্ন ছড়িয়ে দেয় কৃষ্ণ আকাশের বুকে ;
ধীরে ধীরে সেই স্বপ্ন হয়ে উঠে বাস্তব
উজ্জ্বল জোৎস্নার আলোতে।
একটি একটি করে জোনাকির ক্ষীণ আলোও
এসে জড়ো হয় উদাত্ত মানবতার আহ্বানে ;
এভাবেই স্বপ্ন জাগানো তরুণরা স্বপ্ন পূর্ণ করে
অসহায়দের মাঝে মমতার হাত বুলিয়ে।
তারা যুগযুগ ধরে পৃথিবীতে আসে স্বপ্ন দেখাতে,
তারা যুগ থেকে যুগান্তর থেকে যায় স্বপ্ন সাজাতে
প্রতিটি মনবতার হৃদয় সম্পন্ন মানুষের বুকে।

16/9/14


খোঁজ নেয় না কেউ



""খোঁজ নেয় না কেউ ""


সাখাওয়াৎ আলম চৌধুরী

"বাইরে যাচ্ছিস, একটু সাবধানে থাকবি " -
এটা বাবার সব সময়ের কথা।
তার ভয় হয়, মেয়ে বলে রাস্তার শেয়াল কুকুরেরা
হয়তো ওৎ পেতে আছে বুনো কামনার উদ্বেল দৃষ্টিতে।
হয়তো আমারই কোন দূর্বলতায় ঠাঁই হতে পারে কোন মনুষ্য জানোয়ারের আস্তানায় ;
তাই বাবার সাবধান বাণী কখনোই অমূলক ছিলো না।

কিন্তু ঘরের ভিতরে মানুষের মুখোশে কত হিংস্র পশু লুকিয়ে ছিলো ,
সেই কথা বাবা কখনোই জানায়নি আমাকে।
যে নর্দমার কীট গুলো ঘুরে বেড়াত পরিবারের সম্পর্কের আস্তরণে ;
বাবা খালি চোখে তাদের দেখেনি কখনোই,
কিন্তু মেয়ে বলে নরম শরীরের অযাচিত ছোঁয়ায়
তাদের উপস্থিতি অনুভব করতাম প্রতিটি ক্ষণে ক্ষণে।
সেই পশুদের দেখেছি চাচার কদর্য্য অস্বস্তিকর চুমুতে,
কথার বাহানায় স্পর্শ অঙ্গে বিব্রতকর ভাবে গর্হিত চাওয়ায়।
তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছি সম্পর্কের ভাইয়াদের মাঝে,
যখন তাদের অস্থির নিষ্পেষিত হাত খুঁজে বেড়াত ছোট বোনের কচি শরীর।
সেই মাঝবয়সী দাদুরা, যারা ছোট্ট নাতনির তুলতুলে গালে
আর নরম নিতম্বে খুঁজে নিতো নিজেদের নিকৃষ্ট উষ্ণতা।

ভালবাসা আর কদর্যতার পার্থক্য বুঝিনি তখন,
তবে অস্বস্তিকর অস্থিরতায় হাসফাঁস ছিলো সেই জীবন।
সময়ের সাথে সাথে বাড়ে ঘৃন্য আদরের ব্যপ্তি,
যা ছিলো প্রকাশ্যে বয়সের কারণে
এখন তা খুঁজে নেয়. নিরিবিলি অন্ধকার ছাউনি।
সুন্দর কথায় উপহারের লোভে না চাইলেও যেতে হতো বাধ্য মেয়ের মতো।
কাকে বলবো আমি? কাকে বলতে পারি
কিভাবে ভাসছি আমি আপনজনের তপ্ত আদরের নিষিক্ত জলে।
বাবা বলে তুই সাবধানে থাকবি ;
বাবা, আমি সাবধানেই থাকি এখন,
সেই বয়সটা আমার হয়েছে।
কিন্তু যে সময়টাতে তোমাদের সাবধান থাকার কথা ছিলো
সেই সময়টাতে তোমরা সাবধান হওনি।
তোমরা কখনোই খোঁজ নাওনি যখন ছোট্ট শরীরে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ছিলো না ;
যখন আঁধারে নগ্নতার চোরাবালিতে হারিয়ে যেতাম উষ্ণতার জলে।

28/10/14


যখন পৃথিবী আরও বুড়িয়ে যাবে


"""যখন পৃথিবী আরও বুড়িয়ে যাবে ""

তখনকার কথা বলছি -
যখন পৃথিবী আরো বুড়িয়ে যাবে ;
বঙ্গোপসাগরে জমা হবে
পদ্মা মেঘনা যমুনা বিধৌত হাজারো জল।
সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হবে
মায়াময় বসুন্ধরার অপরূপ রূপ।
সব কিছুর গড্ডলিকার প্রবাহে
আমারাও সামিল হবো পিছন সারিদের ভীড়ে।
শুধু তোমার আমার ভালবাসার হবেনা কোন পরিবর্তন ;
হয়তো সময়ের নিষ্ঠুর স্রোতে মেঘ কালো চুল
হয়ে পড়বে শরতের শুভ্রতায় বিবর্ণ।
হয়তো কুঁচকে যাবে শরীরের চামড়া
খরার মৃত্তিকার ন্যায় ফেটে হবে চৌচির।
চোখে থাকবে মোটা ফ্রেমের চশমা ;
দেখতে পাবো না প্রকৃতির নয়নাভিরাম দৃশ্য।
তবুও আমরা বুড়িয়ে যাবো না,
ঋতু বসন্তের নব যৌবনের প্রেমে উদ্দীপ্ত হয়ে
একে অপরকে আকঁড়ে ধরবো তৃণলতা
বৃক্ষের উপাখ্যানের মতো।

দিনান্তের শেষ বিকেলে
দুজনে গিয়ে বসব শাঁন বাঁধানো দীঘির ঘাটে।
করবো রোমন্থন বিগত দিনের প্রেমগাঁথা
পুরোনো ডাইরি হাতে নিয়ে ;
হয়তো স্পষ্ট ভাবে পড়া হবেনা বয়সের ভারে,
স্মৃতির ডাইরি থেকে মিলিয়ে দুজনে করবো চারণ
সেই স্বর্ণালী দিনের রোমাঞ্চ কাব্য।
তোমার একটি হাত থাকবে আমার বাহুতে ধরা,
আমি করবো আবৃত্তি প্রথম যৌবনের প্রেমের কবিতা ;
দিগন্তের আকাশ ধীরে ধীরে পড়বে ঝিমিয়ে,
হবে ফেরা ক্লান্ত পাখিদের নীড়ের পানে।
আমরা দুজন বসে থাকবো নিরব বাতাসের সাথে,
যতক্ষণ না সূর্য তার বাড়ি যায়।

........

27/8/14


বিধ্বস্ত মোর কথামালা "


""বিধ্বস্ত মোর কথামালা ""

নিঃসঙ্গ সময় গুলো
হৃদয় গহীনে জাগায় নিষ্ক্রিয়তার আলোড়ন ;
বিধ্বস্ততায় ভেঙে মুষড়ে যাওয়া কুঠিরের ন্যায়
লন্ডভন্ড  অন্তরস্থল।
পরাস্থ জীবনের ভূলুণ্ঠিত অতীতের ব্যথায়
অস্থির হয়ে উঠে বিক্ষিপ্ত মন ;
হতাশার আস্তিনে ঢাকা পড়ে আছে
বর্তমানের বিশৃংখল  হাহাকার -
অহর্নিশ তিক্ত যাতনায় জর্জরিত আমি ;
হারিয়ে অতীত অহমিকা
নিশ্চল সময়ের হাত ধরে ঘুরে বেড়ায়
নিজেরই কালো গহ্বরে।
চারদিকে চেয়ে দেখি শুধু পড়ে আছে
বেদনা মাখা  শ্মশানের  প্রতিচ্ছবি,
মুহূ মুহূ আর্তনাদে ডুকরে কেঁদে উঠে
মৃত অন্তর আত্মা।
নিঃশেষিত জীবনে আজ আর দেখি না
দিগন্তে প্রজ্বলিত আলোর হাতছানি,
প্রতিনিয়ত সর্পিল যাতনার দংশনে
নীলাভ হয়েছে আমার নিষ্প্রাণ দেহ।
জীবনের কাছে সব হারিয়ে হয়েছি পরিত্যজ্য,
পরিত্যক্ত বসন রয়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে মৃত ভূমিতে।
মাঝে মাঝে এই জীবাত্মা চায় সমস্ত কিছু
মাড়িয়ে আলোর দিকে বেড়িয়ে আসতে 
কিন্তু তা কদাচিৎই হয়ে উঠে আমার ;
এভাবেই হয়তো একদিন  অনন্তের অন্তরালে
নিক্ষিপ্ত হবো এই আমি।

18/6/14

;


শ্রমিকের রক্তে অবনী


""""শ্রমিকের রক্তে অবনী """

সাখাওয়াৎ আলম চৌধুরী

সেদিন মিছিলে মিছিলে মুখরিত ছিলো শিকাগোর রাজপথ,
যখন সাইরেনে বেজেছিলো অধিকার আদায়ের বজ্র শপথ।
সেইদিন শ্রমিকের শোষিত পতাকা উড়েছিলো আকাশে পতপত,
বুর্জোয়া হায়েনাদের নির্মম গুলিতে রঞ্জিত হয়েছিল পিচঢালা পথ।

অবশেষে নির্দয়ে রক্ত পান করে এসেছিল শ্রমিকের মুক্তি,
ভুলি নাই আমরা ভুলি নাই,  তাদের  ঋণ হয়েছে মোদের শক্তি।
শ্রমিকের রক্তাক্ত ইতিহাসের পরও পেয়েছে কি শ্রমিক ভিত্তি?
তবে আজও কেন শ্রমিকের হাহাকার চাই তারা এখনো মুক্তি?

শ্রমিকের শ্রমে আর মননে মুখরিত হয় আজও এই ধরণী,
শ্রমিক শ্রেণীর কাছে এই সভ্যতা সবসময় থেকেছে ঋণী।
শ্রমিকের রক্ত ঘাম ছাড়া কখনো পরিপূর্ণ নয় এই অবনী,
আজ সময় এসেছে তাদেরও দিতে যোগ্য অধিকার ও সম্মানী।

30/4/14


খোঁজ নিও আমার সাধারণের ভীড়ে



"""খোঁজ নিও আমার সাধারণের ভীড়ে ""

হয়তো তুমি দেখবে একদিন
দাঁড়িয়ে আছি কোন ব্যস্ত রাস্তায়,
গীটার কাঁধে আউলা চুলে
গেয়ে চলেছি গান ফুটপাতের টোকাইয়ের সাথে।
দেখবে তুমি কোন ঝুম বৃষ্টির দিনে
মেতেছি খেলায় কিশোরদের সাথে খোলা ময়দানে।
মাঝে মাঝে আমার দেখা মিলবে
রেললাইনের ধারে বস্তিগুলোতে,
খুব আয়েশে বসে খাচ্ছি গুড় -মুড়ি
উদাম গায়ের বাচ্চা কোলে নিয়ে।
হয়তো তুমি খুঁজে পাবে আমাকে
ব্যস্ত পথের সেইসব ভাসমান চায়ের দোকানে,
খুব মসগুল আড্ডায় পথের মানুষের সাথে।
কখনো কখনো আমায় পাবে
নির্জন রাতে খোলা আকাশের নীচে
শুয়ে থাকা দুঃখী মানুষদের ভীড়ে।
তুমি খোঁজ নিতে পার আমার
হকারদের সেইসব সস্তা মার্কেটে,
পরম আনন্দে হয়তো করছি দরকষাকষি
পছন্দের কোন কিছু নিয়ে।
আমার দেখা মিলবে সেই ঝিলের কিনারায়
সেখানে হয়েছিল তোমার আমার প্রেমের সাক্ষাৎ,
একাকী তুমিহীন বসে থাকবো নিরবে ;
খোঁজ নিতে পার শীতের সন্ধ্যায়
কাছেই হয়তো কোথাও বসেছি খড়ের আগুনে।
তুমি কখনো খোঁজ নিওনা আমার
তোমার পাহাড়সম অট্টালিকার খুপরিতে,
অথবা বিদেশী ফ্লেভারে অখাদ্য কোন রেস্টুরেন্টে ;
তুমি কখনোই পাবেনা আমাকে
শীতাতপনিয়ন্ত্রিত তথাকথিত বড়লোকের
বিপনী বিতানগুলোতে,
যেখানে দু -টুকরো কাপড়ের মূল্যে
চলে যায় মধ্যবিত্তের সংসার অনায়াসেই।
আমাকে কখনোই পাবেনা
হাই সোসাইটির উলঙ্গপনা বিক্রিত রুচির
বিনোদনশালাতে লম্ফজম্ফ করতে।
তারচেয়ে তুমি খোঁজ নিও আমার
পথের ধারে কোন সাধারণ পার্কে,
হয়তো বসে বসে মনের সুখে বাদাম চিবোচ্ছি।

22/9/14